মুজাহিদুর ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি :: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিতরণ করা ৭১২ সনদে ‘ব্যাচেলর’ শব্দের বানান ভুল লেখা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সনদ পাওয়া শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
যে হাতে গোল্ড মেডেলে নিয়েছি আবার সে হাতে বানানের ভুল সনদ গ্রহণ করেছি এমনটি ব্যক্ত করেছেন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলর পদক পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন শিক্ষার্থী।
ঐদিন বিকেলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে সনদ দেওয়া হয়। এরপর দেখা যায়, সনদে ‘ব্যাচেলর’ শব্দকে লেখা হয়েছে ‘ব্যাচেলার’। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্ধারিত বিকেলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষনা করেন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য এ কে এম সাঈদুল হক চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উপাচার্য ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডাকযোগে সনদ পাঠানোর আশ্বাস দেন।
তবে, এ বিষয়ে উপাচার্যের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরণের মন্তব্য করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ দেওয়া। অথচ সে কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভুল করেছে। এর চেয়ে দায়িত্বহীনতা আর কী হতে পারে। দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে এসে হাতে পেয়েছে ভুল বানানের সনদ। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?
শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৬ সেপ্টেম্বর। তিনি চলে গেলে এই ভুল সনদ সংশোধন নিয়ে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী মূল সনদ নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের আগের নেওয়া সাময়িক সনদ জমা দিতে হয়। এতে শিক্ষার্থীরা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া নিয়ে ভোগান্তিতে পড়বেন।
রেজিস্ট্রার মো. মমিনুল হক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা সনদে ‘ব্যাচেলর’ বানান ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠানের ‘সনদপত্র প্রণয়ন কমিটি’ সনদ তৈরি করেছে। ভুল করলে তারাই করেছে। এর সঙ্গে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে জানার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ও ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেনকে ফোন করলে তিনি বৈঠকে আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
প্রসঙ্গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি।