আদূরী শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে!আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি ::  অসুস্থ্য মেয়েকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে বাবা-মা। আদূরী খাতুন (১৩) চিৎকার শুনে আশপাশের কেউ কেউ বলছে মেয়েটিকে ভূতে ধরেছে আবার কেউ বলছে জিনের আছর লেগেছে।

তবে লোকজনের এমন কথায় অসুস্থ মেয়েকে শিকল দিয়ে বেধে রাখবেন বাবা-মা তা শুনে অনেকেই আবাক। বারবার চিৎকার করছে আদূরী।‘আমার পায়ের শিকল খুলে দাও। আমি ঢাকা যাবো। ঘটনাটি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকায় ঘটেছে।

সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের ভিতরে খাটের সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে মেয়েটিকে। এমন দৃশ্য দেখতে বাড়িতে এসে ভিড় করছেন পাড়া প্রতিবেশীরা। মা মনি বেগম অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করেন। বাবা নুরুজ্জামান দিনমজুর। মা অসুস্থ্য মেয়েকে ছেড়ে কোথাও কাজে যেতে পারেছে না।

মেয়ের চিকিৎসা না করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার কারণ জানতে চাইলে মনি বেগম বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরে আদূরী খাতুন ঘরে থাকতে চায় না। বাঁধা দিলে ঘরের জিনিষপত্র ভাংচুর করে। মাঝে মধ্যে সংঙ্গাহীন হয়ে পড়ায় ভূত-পেতের আচর লেগেছে ভেবে গ্রাম্য এক কবিরাজ দিয়ে নয়‘শত টাকার বিনিময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

কিন্তু তাতে তেমন কোন কাজ হয়নি। এবার আদূরী বায়না ধরেছে ঢাকায় গার্মেন্টেসে কমরত দুই বোনের কাছে যেতে। তাই তাকে আটকাতে শিকল বেঁধে রাখা হয়েছে বলে দাবি মা মনি বেগমের।

জানা গেছে, আদূরী স্থানীয় শাহ্‌ গরীবুল্ল্যাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। প্রায় ৮ মাস আগে সে ঢাকায় দুই বোনের কাছে গিয়ে ছিল গার্মেন্টেসে কাজ করতে। সেখান থেকে গত রোজার মাসে বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ে আদুরী।

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বিমল কুমার জানান, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় জিন ও ভুতে আছর বলতে কিছুই নেই। মেয়েটি’র মানসিক সমস্যা হতে পারে। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ্য করা সম্ভব।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here