দিনাজপুর : দিনাজপুর বিদুৎ্য বিভাগে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্যন করে ইলেকট্রিশিয়ান আজিজুল হক বর্তমানে কোটিপতি তালিকায় প্রবেশ করেছে। আজিজুল সরকারি বেধে দেওয়া ডিউটি পালন না করলেও গত ১২ মাসে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা ভ্রমন ভাতা ও এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের বিল হিসেবে উত্তোলন করেছে। আবার বিদুৎ্য বিভাগের সরকারি চাকুরী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একাধিক ব্যক্তিদের কাছ থেকে। দিনাজপুরে একটি বিদুৎ্য সংগঠনের নেতা হওয়ায় সকল দুর্নীতি ও অনিয়ম করার সুযোগ পেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

দিনাজপুর বিদুৎ্য বিভাগ সূত্রে জানাযায়, দিনাজপুর বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর ইলেকট্রিশিয়ান-বি আজিজুল হক দীর্ঘদিন থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতি দাপটের সাথে চালিয়ে যাচ্ছে। আজিজ নিয়মিত একজন মাদক সেবনকারী সংঙ্গবদ্ধ দলের সদস্য। এই মাদক সেবনকারীদের মধ্যে বিদুৎ্য বিভাগের অন্যতম বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-১ এর সাহয্যকারী রাজিব উল্লাহ সমু ও বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর রবিউল ইসলাম। মাদকের টাকা জোগান দিতে শহরের উপকন্ঠে অবস্থিত পুলহাট শিল্প নগরী এলাকার বিভিন্ন কল-কারখানা, অটোরিক্সা গ্যারেজের ডিজিটাল মিটার টেম্পারিং করে মিটার সম্পূর্ন সাদা (ডাটা ডাউন) করে দেয়। এছাড়া শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যু বিল বকেয়া থাকায় সংশ্লিষ্টরা সংযোগ বিছিন্ন করে আসলে আজিজুল হক মোটা অংকের টাকা গ্রহন করে বিছিন্নকৃত সংযোগ গুলোতে বকেয়া বিল পরিশোধ ছাড়াই সংযোগ লাগিয়ে দেয়।

অন্যদিকে সারা মাস ঠিক মতো ডিউটি পালন না করলেও মাসে ১৮৫ ঘন্টা অতিরিক্ত দায়িত্বের বিল উত্তোলন করেছে। গত ১৪ মাসে অতিরিক্ত দায়িত্বের বিল এক লক্ষ ষাট হাজার টাকারও বেশী উত্তোলন করেছে। এমনিতেই সরকারি বেধে দেওয়া দায়িত্ব পালন করেনা তার মধ্যে আবার অতিরিক্ত দায়িত্বের বিল আবার এরই মধ্যে মাসে ১০-১২ বার ঢাকায় যাতায়াত করলেও এর বিল বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় গত ১৪ মাসে উত্তোলন করেছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা।

আজিজুল হকের এসকল দুর্নীতি অনিয়মের পথে কাটা হলে যে কাউকে তার ব্যক্তিগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারপিট করান করার বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ আগষ্ট দিনাজপুর বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে একটি দল শহরের পুলহাট এলাকায় মিটার চেক অভিযানে গেলে সেখানে আসলাম নামের এক চারকল ব্যবসায়ীর মাধ্যমে দিনাজপুর বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে আজিজুল হক লাঞ্চিত করিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে।

দিনাজপুর বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর ইলেকট্রিশিয়ান-বি আজিজুল হক বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। সে বর্তমানে দিনাজপুর শহরে প্রাণ কেন্দ্র গুলোতে একাধিক বাড়ি ক্রয় করেছে। বর্তমানে বাড়ি গুলোতে ৫ থেকে ৭তলা বিশিষ্ট পর্যন্ত ফাউন্ডেশনের গাথনি দিয়ে রেখেছে।

এব্যাপারে দিনাজপুর বিদুৎ্য বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সকল প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কেউ যদি সরকারকে ফাকি দিয়ে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্যন করে থাকে তাহলে আমাদের বিদুৎ্য বিভাগে এর জন্য পৃথক বিভাগ রয়েছে তারা এর সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

এদিকে আজিজুল হক বিদুৎ্য বিভাগে চাকুরী দিবে মর্মে অনেক ব্যক্তিকে লোভ দেখালে তারা তাকে চাকুরী পাওয়ার আশায় লক্ষ লক্ষ টাকা দেয়। পরে চাকুরী না হওয়ায় আজিজুল হকের নিকট টাকা উত্তোলন করতে পারছেনা। কেউ যদি টাকা চাইতে যায় তাহলে তাকে বিভিন্ন প্রকায় হুমকি প্রদান করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দুর্নীতিবাজ বিদুৎ্য কর্মচারী হয়ে কোটি পতি কিভাবে! এর সঠিক তদন্ত করে আজিজুল হকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছে দিনাজপুরের সাধারন মানুষ।

মাহিদুল ইসলাম রিপন/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here