এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ প্রতনিধি :: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার ১২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা, অপরিকল্পিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলগুলো ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ, প্রভাশালীদের দখলবাজি ও পানি সরানোর জন্য পাম্প স্থাপন না করায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এদিকে, পানি নিষ্কাশন করতে কয়েকটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল খনন কাজ শুরু করেছেন তারাব পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে কিছুটা পানি সরানো সম্ভব হলেও তাতে জলাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে।
রবিবার ঘুরে দেখা গেছে, তারাব পৌরসভার গন্ধর্বপুর, কাহিনা, নওগাঁ, শান্তিনগড়, রূপসী, দেবই, কর্ণগোপসহ ১২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ৩ মাস ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি ও শিল্প-কারখানার ময়লা পানিতে সারা বছরই পানি জমে থাকে এসব এলাকায়।
শান্তিনগড় জামে মসজিদ ও এতিমখানা, পূর্বপাড়া জামে মসজিদ, ফ্রেন্ডস কিন্ডার গার্টেন স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মসজিদে পানি উঠে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হাঁটু থেকে শুরু করে কোমর পর্যন্ত পানি ভেঙে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে দেখা গেছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেঞ্চ দিয়ে রাস্তা বানিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করছে।
শুধু তাই নয়, স্থানীয়দের ঘর বাড়ি থেকে শুরু করে জামদানি তাঁতীদের ঘরে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে গেছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এখানকার মানুষ। দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করে নৌকা যোগে বা কোমর পর্যন্ত পানি দিয়ে চলাচল করে বসবাড়িতে যাতায়াত করেতে স্থানীয়রা। পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় নৌকা যোগে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। অনেকে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। জলাবদ্ধতার কারণে কয়েক শত বিঘা জমিতে ফসল ফলানো যাচ্ছে না। এতে করে স্থানীয় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জামদানি তাঁতী ওমর ফারুক জানান, তাঁতঘরে পানি উঠে পড়েছে। তারপরও পেটের দায়ে মাঁচা বেঁধে কাপড় বুনতে হচ্ছে।
স্কুল শিক্ষক শরীফ আহাম্মেদ, মনির হোসেন, শিক্ষিকা লিপি আক্তার, রত্মা বেগম, হেলেনা আক্তার, সাহিদা আক্তার জানান, এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বার বার জানালেও কোনো ফল হয়নি। দ্রুত পানি নিষ্কাশন করে পানিবন্দি দশা থেকে মুক্তির দাবি জানান তারা।
তারাব পৌরসভার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তানজিল আবিদ বিল্ডার্সের মালিক সারোয়ার হোসেন রাসেল বলেন, পৌরসভার যাত্রামুড়া, দঘী বরাব, বিশ্বরোড এলাকার পানি উন্নয় বোর্ডের ক্যানেলগুলো খনন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গন্ধর্বপুর সাইনবোর্ড হতে টিআইসি মোড় ও দেওয়ানবাগ এলাকার ক্যানেল খননের কাজ চলছে। আশা করা যায় কিছুটা জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।
তারাব পৌরসভার মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, মানুষের দুর্ভোগের চিন্তা করে পানি নিষ্কাশন করে জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা চলছে।