জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে এক গৃহবধুকে গৃহকর্মীর কাজের কথা বলে লেবালনে নিয়ে ৭মাস ঘরের মধ্য আটকে রেখে আদম ব্যাপারি চক্র মধ্যযুগীয় কায়দায় তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় দেশে ফেরত পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বর্তমান ওই গৃহবধু শতাধিক ক্ষত চিহৃ নিয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পৌর এলাকার হাবাসপোল গ্রামে।

তবে ভিকটিম শতাধিক ক্ষতচিহৃ নিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় কিভাবে বিমানে করে ঢাকায় পৌছাইলো এবং ঢাকায় নামার পরে সে কোন অপরাধি চক্রের নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকতে পারে বলে এমন প্রশ্নও জনমনে দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে ।

জানা গেছে, গত ৭ মাস আগে কেশবপুর পৌর সদরের হাবাসপোল গ্রামের আরশাদ সরদারের কন্যা আবিরন নেছাকে (৪৫) গৃহকর্মীর কাজ দেয়ার কথা বলে লেবালনে নিয়ে যায় পাশ্ববর্তী ভোগতী নরেন্দ্রপুর গ্রামের বক্কর মোড়লের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৭)।

এ ব্যাপারে ভিকটিমের পিতা আরশাদ সরদার জানান, মানষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের মতো আচারন করার অভিযোগ তুলে তার মেয়েকে ২০ জুলাই বিমানে করে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো পর বিমান বন্দরে গিয়ে তার মেয়েকে পাওয়া যায়নি। এরপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মেয়েকে খোজাখুজি করা হয় এমনকি পত্রিকায়ও নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। একপর্যায়ে ১৫ আগস্ট জনৈক এক পরিচিত জন তাদের জানায় তার মেয়ে সাভার গনস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধিন।

খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে স্বজনরা জানতে পারে গত ১২ আগষ্ট সাভার থানা পুলিশ সাভার এলাকার একটি নদীর ধার থেকে তাকে উদ্ধার করে সাভার গনস্বাসহ্য কেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করেছে। দরিদ্র পিতা জমি বন্ধক দিয়ে নিয়ে যাওয়া ৫০ হাজার টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিয়ে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসে।

বর্তমান কেশবপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবিরন নেছার শরীরে ব্লেড ও খুর দিয়ে কাটার শতাধিক ক্ষতচিহৃ রয়েছে। দরিদ্র পিতা অর্থের অভাবে তাকে ঠিকমত চিকিৎসা করাতে পারছে না। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কা জনক।

নির্যাতিত আবিরন জানান, গৃহকর্মীর কাজের কথা বলে আলমগীর তাকে লেবালনে নিয়ে যায়। সেখানে আরো ২টি মেয়ের সাথে তাকে একটি ঘরের মধ্য আটকে রেখে শরীরির নির্যাতন চালিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে।

এসময় বাঁধা দিলে ওই আদম ব্যাপারী আবিরনের শরীরের বিভিন্ন স্থান ব্লেড ও খুর দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করেছে। তার শরীর থেকে একটি কিডনি নিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও তার সন্দেহ হচ্ছে। এরপরও তাকে বেতন হিসেবে একটি টাকাও দেয়া হয়নি। সে এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে আলমগীরের স্বজনরা শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের অভিযোগ অস্বিকার করে জানান, লেবালনে আবিরন মানষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের মতো আচারন করায় আলমগীর তার স্বজনদের জানিয়ে ২০ জুলাই তাকে বিমানে করে দেশে পাঠানো ব্যবস্থা করেন।

এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল জলিল জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here