সামগ্রীক উন্নয়নে বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগামী সংসদ অধিবেশনে জাতীয় বাজেট ২০১৫-১৬ উপস্থান করা হবে। এ বাজেট নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের থাকে নানান কৌতহল, থাকে মতামত-পরামর্শ। বাজেটে নারী তার কতটুকু অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে পাশাপাশি আগামী বাজেটে তাদের প্রত্যাশা কি? দেশের বিশিষ্ট নারী জনদের কাছে এ সব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছেন আ হ ম ফয়সল।
নূরজাহান বেগম মুক্তা, সংসদ সদস্য
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সার বিশ্বের কাছে একটি রোল মডেল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননত্রেী শেখ হাসিনা দেশের নারী সমাজকে মর্যাদা দিয়েছেন, মূল্যায়িত করেছেন। নারীদেরকে মাথা উচু করে চলারমত ক্ষমতায়িত করেছেন। গত ৩০ বছরে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ৭ শতাংশ থকে ক্রমান্বয়ে ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশে উন্নিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার দরিদ্র মা’দের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা তিনশত টাকা থেকে ৫শত টাকায় উন্নিত করেছে। আগামীতেও এ ধরণের ভাতার পরিমান ও পরিধি বৃদ্ধি করবে। সরকার নারী উদ্যেক্তাদের উন্নয়নের জন্য প্রতি বছর বাজেটে একশত কোটি টাকা বরাদ্দ রাখছে। তবে কখনো কখনো এই বরাদ্দ ঠিক মত ব্যবহার হচ্ছে না।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। কৃষি, শিল্প, শ্রমে নারী অনেক অবদান রেখে চলেছে, তাদের অবদানের স্বীকৃতী দিতে হবে। নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুনির্দিষ্টভাবে আগামী বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে এবং এর সুষ্ঠ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
নূরজাহান বেগম মুক্তা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ বিশেষত নারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই উপকূলীয়, চরাঞ্চলিয়, আদিবাসী নারীদের সুরক্ষায় আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ থাকা অবশ্যক। গ্রামীন নারীর অর্থনৌতিক বিকাশে কুটিশিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সুনিষ্টি বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে।
গ্রামীন দরিদ্র নারীদের স্বাস্থ্য বিমা- চিকিৎসা সহায়তা কার্ড চালু করতে হবে। ভুমিহীন নারীদের নামে খাস জমি বরাদ্দ দিয়ে পূণর্বাসনের উদযোগ নিতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন, ন্যায্যতা, সমঅংশগ্রহণ, মতার ভিত্তিতে, সামাজিক যুকি ভাতা নিশ্চিত করণ ও জীবন চক্র ভাতার প্রচলণের জন্য আগামী বাজেটে বরাদ্দ থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, পানি, বিদ্যুৎ জালানির ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রগুলোতে নারীর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। ৪০টি মন্ত্রণালয় জেন্ডার বাজেট করে থাকলেও আগামী বাজেটে অন্ত:ত পরিক্ষামূলকভাবে ৩টি মন্ত্রণালয়ের বাজেট পর্যবেক্ষণের উদযোগ নেয়া প্রয়োজন। আগামী বাজেটে সরাসরি উন্নয়ন বরাদ্দ কমপক্ষে ১৩ শতাংশ করা প্রয়োজন।
ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে নারী বান্দব করে, নারীর গহনা আমানত হিসেবে রেখে ঋণ প্রদানের উদযোগ নিতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাজেট বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। আমাদের দেশে নারীর গৃহশ্রমকে অর্থনৌতিক ভাবে মূল্যায়ন করা হয় না, উন্নত দেশগুলো এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই আমাদেরকেও বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে।
নূরজাহান বেগম মুক্তা- জাতীয় বাজেটে নারী শ্রমিকসহ গার্মেন্টস শ্রমিকদরের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে রেশনিং, শ্রমিক কলনী নির্মান, নিরাপদ মাতৃত্ব কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন বলেও আমাদের জানান।