আইআরআইডেস্ক নিউজ :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাজে সন্তোষ জানিয়েছে ৭৭ শতাংশ মানুষ। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে অভিযোগের মুখে থাকা নির্বাচন কমিশনের কাজে সন্তুষ্ট ৬২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউটের (আইআরআই) জন্য এই জরিপ করে দিয়েছে নিয়েলসন-বাংলাদেশ।
২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে চালানো এই জরিপে ৬৪ জেলার ২ হাজার ৫৫০ জনের মতামত নেয়া হয়েছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩০ শতাংশ বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থাকে ভালো বলেছেন। ৪৯ শতাংশের মতে অর্থনীতি ‘কোনো না কোনোভাবে ভালো’। আর ৭ শতাংশের মতে খুবই খারাপ, কোনো না কোনোভাবে খারাপ বলেছেন ১২ শতাংশ।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক আয় বেড়েছে বলে ৭২ শতাংশ জানিয়েছে। ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকার কথা জানিয়েছে। আর ৫ শতাংশ আগের চেয়ে খারাপ হওয়ার কথা বলেছে।
৯০ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের পরিবার স্বচ্ছন্দে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে পারছে। এগুলো কিনতে হিমশিম খাওয়ার কথা জানিয়েছে ১০ শতাংশ।
তবে বাজারের ওপর ভরসা রাখতে পারেননি বেশিরভাগ মানুষ। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা জানিয়েছেন ৬১ শতাংশ মানুষ। ১২ শতাংশ মনে করছে দাম অপরিবর্তিত থাকবে। দাম কমার বিষয়ে আশাবাদী ১৪ শতাংশ।

জরিপে অংশগ্রহণকারীরা বেকারত্বকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সমস্যার বিচারে বেকারত্বকে ৩৩ শতাংশ, দুর্নীতিকে ৩২ শতাংশ, যানজটকে ২৮ শতাংশ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে ২৫ শতাংশ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে ২১ শতাংশ চিহ্নিত করেছেন।
পুলিশের কাজে অসন্তুষ্টির কথা বলেছেন জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ। ৪২ শতাংশের মতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত এই বাহিনী ঠিক কাজ করছে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল বলেছেন বেশিরভাগ মানুষ। ২১ শতাংশের মতে খুবই স্থিতিশীল, ৪৯ শতাংশ মনে করে ‘কোনো না কোনোভাবে স্থিতিশীল’। ২১ শতাংশ রাজনৈতিক অবস্থাকে অস্থিতিশীল বলেছেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে বলে আশাবাদী ৫০ শতাংশ। ১৭ শতাংশের মতে এর কোনো পরিবর্তন হবে না। ১৩ শতাংশ খারাপের আশঙ্কা করেছেন।
বর্তমান সরকারের মেয়াদ পূর্তির পরে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে ৫১ শতাংশ। পক্ষান্তরে ৩৬ শতাংশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে।
২০১৬ সালের মধ্যে নির্বাচন চায় ৩ শতাংশ, পরবর্তী দুই-তিন বছরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে ১ শতাংশ মানুষ। আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে খুবই আগ্রহী ৮৪ শতাংশ। আর ভোট দিতে অনীহা জানিয়েছেন ১ শতাংশ।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪৭ শতাংশ জানিয়েছেন, কাকে ভোট দেবেন সে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মতামত মুখ্য ভূমিকা রাখে। কারো কথা প্রভাবিত না হওয়ার কথা জানিয়েছেন ২৫ শতাংশ।
নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বলে মনে করেন ৫৯ শতাংশ। তাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশের এ বিষয়ে জোরালো বিশ্বাস রয়েছে। অন্যদিকে ইসির স্বাধীনতায় সন্দিহান ২৯ শতাংশ।
আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের পক্ষে বলেছেন ৬৮ শতাংশ মানুষ। ২৯ শতাংশ এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রেখেছেন বেশিরভাগ মানুষ। ক্ষমতাসীন দলের প্রতি ৪৮ শতাংশের সমর্থনের বিপরীতে বিএনপির পক্ষে ২৪ শতাংশ রায় দিয়েছেন।
এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগের (৭৯ শতাংশ) শিক্ষাগত যোগ্যতা নবম শ্রেণি পর্যন্ত। এর মধ্যে ২২ শতাংশ নিরক্ষর।
তাদের অধিকাংশই ৫৯ শতাংশ টেলিভিশন থেকে খবর পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি দেখা টিভি চ্যানেলের তালিকায় উপরের দিক থেকে রয়েছে সময় টিভি (২৩%), বিটিভি (১৮%), এটিএন (১৪%), এনটিভি (১০%), আরটিভি (৭%), চ্যানেল আই (৬%), ইটিভি (৪%), চ্যানেল একাত্তর (৩%)।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here