is_133989নিউজ ডেস্ক: দুই বছরেই অন্তত ১৩০৯ মানুষকে খুন করেছে ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’র (আইএস) জঙ্গিরা। আর এই সময়ে জঙ্গিরা বেশি টার্গেট করেছে ইউরোপের দেশগুলিকেই। তাদের টার্গেটে রয়েছে আমেরিকাও। এর মধ্যে বেশির ভাগ ঘটনারই দায় ‘বীরত্বে’র সঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছে আইএস। বাকি ঘটনাগুলোতেও আইএস জঙ্গিরা জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

২০১৪ থেকে আইএসের তা-বলীলার ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪-র অক্টোবর থেকে বার বারই ওই জঙ্গি সংগঠনের হানাদারির শিকার হয়েছেন মূলত পশ্চিমি দেশগুলির নাগরিকরা। তাঁরা হয় খুন হয়েছেন তাঁদের দেশ বা ইউরোপেরই কোন দেশে। অথবা তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন এশিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলিতে।

পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বিদেশিদের ওপর জঙ্গি বাহিনী আইএসের হানাদারি শুরু হয়েছিল আলজেরিয়ায়। ২০১৪ সালের অক্টোবরের সেই ঘটনায় আইএস জঙ্গিরা এক ফরাসি নাগরিকের মাথা কেটেছিল। এর পর একই বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বরে তারা আরও দু’টি হামলার ঘটনা ঘটায় কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায়। কানাডায় এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর পর গাড়ি চালিয়ে দিয়ে তারা পিষে মেরেছিল পশ্চিমি নাগরিকদের।

২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে পশ্চিমি দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর হানাদারির ৫টি ঘটনা ঘটিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দু’টি ঘটনা ঘটেছিল ডেনমার্ক আর টিউনিসিয়ায়। টিউনিসিয়ার একটি মিউজিয়ামে আইএস জঙ্গিদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন বিদেশি পর্যটকরা। এর পর ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর, এই ৯ মাসে ইউরোপের দেশ বা বিদেশি নাগরিকদের ওপর আইএস জঙ্গিদের হামলার ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৯টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দু’টি ঘটনার একটি ঘটেছে মিশরে। অন্যটি প্যারিসে। মিশরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২২৪। প্যারিসে ১৩০। মিশরের সিনাইয়ে একটি রুশ যাত্রীবাহী বিমানকে গুলি করে মাটিতে নামিয়েছিল ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা।

আর চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে বিদেশি নাগরিকদের ওপর আইএসের হানাদারির ঘটনা ঘটেছে মোট ২১টি। তার মধ্যে অন্যতম ব্রাসেলস, অরল্যান্ডো ও বাংলাদেশ।

আবার ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬-র জুন পর্যন্ত আইএস জঙ্গিরা এশিয়া ও আফ্রিকার যে যে দেশে হামলা চালিয়েছে (মিশর, ইয়েমেন, কুয়েত, তুরস্ক, লেবানন ও বাংলাদেশ) সেখানেও তাদের মূল টার্গেট ছিলেন পশ্চিমা দেশগুলির নাগরিকরাই।

পরিসংখ্যান থেকে এটাও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা ইউরোপের দেশগুলি গত দু’বছরে বার বারই টার্গেট হয়েছে আইএস জঙ্গিদের। কিন্তু বিস্ময়ের হলেও সত্য যে, ব্রিটেনকে তারা এই সময়ে আদৌ নিশানা করেনি!

‘ব্রেক্সিট’-এর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যেতে রীতিমতো উল্লসিত হতে দেখা গেছে আইএস-কে। তাদের এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিতেও দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাদের প্রসার ও নিরাপত্তার জন্য ইউরোপীয় জোটকে ভাঙতে আর ইউরোপের দেশগুলিতে লাগাতার হামলা চালিয়ে সেগুলিকে আর্থিক ভাবে দুর্বল করে দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে আইএস জঙ্গিরা।

আর ব্রিটেনকে তারা গত দু’বছরে কেন টার্গেট করেনি? এর স্পষ্ট কোনও উত্তর না মিললেও, সম্প্রতি একটি নজরকাড়া মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেছেন, ‘জামাতের মতো বিভিন্ন মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠনের বহু সদস্যই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন পূর্ব লন্ডনে। যেটা খুবই উদ্বেগজনক।’

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here