য়িীনিউজ ডেস্ক :: ফিফার কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য টেও সোয়ানৎসিগার জার্মানির ‘স্পোর্ট বিল্ড’ পত্রিকাকে বলে বসেছেন: ২০২২-এর বিশ্বকাপ কাতারে হবে না, এমনটাই তাঁর বিশ্বাস৷ কাতার কিন্তু বলছে: গরমে বা শীতে, বিশ্বকাপ কাতারে হবেই৷

জার্মান ফুটবল সমিতির সাবেক প্রধান সোয়ানৎসিগার গত সোমবার যে মন্তব্য করেন, তার পিছনে তাঁর যুক্তি ছিল: চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বলছেন যে, কাতারের ঐ গরমে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব তারা নিতে পারবেন না৷ ২০১০ সালে যখন কাতারকে বিশ্বকাপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখনই তা নিয়ে বিতর্ক ছিল৷ কিন্তু সব সত্ত্বেও ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, বিশ্বকাপ যথারীতি গ্রীষ্মেই অনুষ্ঠিত হবে৷

সেই পুরনো বিতর্ক থামেনি, বরং বেড়েই চলেছে৷ তেল ও গ্যাস সমৃদ্ধ কাতার তার জবাব দেবার চেষ্টা করেছে শীততাপ নিয়ন্ত্রণের সর্বাধুনিক, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি দেখিয়ে৷ সে এমন ‘কুলিং টেকনোলজি’, যা দিয়ে স্টেডিয়াম, ট্রেনিং-এর এলাকা, ‘ফ্যান জোন’, সব কিছুই ঠান্ডা রাখা যায়৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও প্লেয়ার এবং বিদেশ-থেকে-আসা ফ্যানরা কাতারের গরম সামলাতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়৷

‘‘ওরা স্টেডিয়াম ঠান্ডা করতে পারে, কিন্তু বিশ্বকাপ তো আর শুধু স্টেডিয়ামে হয় না,” বলেছেন সোয়ানৎসিগার৷ ‘‘সারা পৃথিবী থেকে ফ্যানরা আসবেন এবং এই গরমে ঘুরে বেড়াবেন৷ প্রথম কারুর জীবনাশঙ্কা দেখা দিলেই পুলিশ থেকে শুরু করে সরকারি কৌঁসুলির তদন্ত অবধি মামলা গড়াবে৷ ফিফার এক্সিকিউটিভ কমিটির মেম্বাররা তার জবাবদিহি করতে চান না” – সোয়ানৎসিগারের স্পষ্ট বক্তব্য। ফিফার তরফ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে যে, সোয়ানৎসিগারের মত তাঁর নিজের, কার্যনির্বাহী পরিষদের নয়৷ এমনকি ফিফা সোয়ানৎসিগার-এর ‘‘ব্যক্তিগত মতামত” সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে৷

২০২২ বিশ্বকাপের কাতারি উদ্যোক্তারা বলছেন, তারা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, ঠান্ডা রাখার প্রযুক্তিগুলি বাস্তবিক কার্যকরি৷ কাতার ২০২২ কমিউনিকেশনস ডাইরেক্টর নাসের আল-খাতের বলেছেন, ‘‘আমরা হাতে-নাতে দেখিয়েছি যে, ঠান্ডা করার পদ্ধতি স্টেডিয়ামের বাইরে খোলা জায়গাতেও কাজ করে৷ এই গ্রীষ্মেই আমরা একটি ওপেন-এয়ার ব্রাজিল ২০১৪ ফ্যান জোনে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাপমাত্রাকে নামিয়ে এনেছি ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷”

আল খাতের-এর মতে: ‘‘পরিবেশ বান্ধব শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির বিকাশ আমাদের দেশ, অঞ্চল এবং অনুরূপ আবহাওয়ার দেশগুলির পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার৷ এর ফলে এমন সব দেশ খেলাধুলার বড় বড় অনুষ্ঠানগুলির আমন্ত্রণকর্তা হবার সুযোগ পাবে, যাদের কথা আগে ভাবাও যেত না৷” কিন্তু যে দেশে গ্রীস্মে তাপমাত্রা ৪০ পার হয়ে ৪৫ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে, যেমন কাতার? কাজেই গরমের বদলে টুর্নামেন্টটিকে শীতে, অর্থাৎ ২০২২ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি কিংবা নভেম্বর-ডিসেম্বরে করার কথা ভাবতে হচ্ছে ফিফাকে – তা-তে ইউরোপ তথা বিশ্বের ফুটবল ক্লাবগুলোর যতই গোঁসা হোক না কেন৷

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here