ইয়ানুর রহমান, শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি :: ১০ টাকার চাল বিক্রির অনিয়মের ব্যাপারে যশোরে তদন্ত করতে শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা পেয়ে মঙ্গলবার অনিয়ম তদন্তে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামে দুদক।
দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১০ টাকার চাল নিয়ে অনিয়মের তদন্তের নির্দেশনা এসেছে। আমি নিজে মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) যশোর সদর উপজেলার উপশহর ইউনিয়নের একটি বস্তিতে গিয়েছি। তদন্তের জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস থেকে তালিকা চেয়েছি। বৃহত্তর যশোরের (ঝিনাইদহ, নড়াইল, যশোর, মাগুরা) চার জেলার অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যশোর জেলার সর্বত্রই ১০ টাকার চাল দেওয়ার জন্য কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত, ডিলার নিয়োগ, ওজনে চাল কম দেওয়া, নিম্নমানের চাল সরবরাহসহ বিভিন্ন অনিয়ম করা হচ্ছে।
এর মধ্যে, মণিরামপুরের কাশিমপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ার্ড মেম্বার শহিদুল ইসলামের ভাগ্নে ইমরান হোসেন উপজেলার খেদাপাড়া কলেজের প্রভাষক। মেম্বারের বোন ইত্যা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়া। এদের দুইজনের নামেই ১০ টাকার চালের কার্ড দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম।
এছাড়া আগে থেকে বয়স্ক ভাতাপ্রাপ্ত মেম্বারের মা কম দামের কার্ডের চাল উত্তোলন করছেন। মেম্বার শহিদুল ইসলাম তার ওয়ার্ডের গরীব মানুষের জন্য ১১০টি কার্ড বরাদ্দ পান। যার অধিকাংশ তিনি নিজের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নামে করে দিয়েছেন। বাকী যে কয়েকটি কার্ড সাধারণ মানুষকে দিয়েছেন তার জন্য জনপ্রতি নিয়েছেন ৫০০ টাকা। মা, বোন, ভাগ্নের নামে কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার কথা স্বীকার তিনি বলেন, ‘প্রথম বার মেম্বার হয়েছি। তাই একটু ভুল হয়ে গেছে।’
গত ২০ অক্টোবর এমন অভিযোগে কেশবপুরের হাসানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মোড়লের ডিলারশিপ বাতিল করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ রায়হান কবীর। একই সঙ্গে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আলাউদ্দিন মোড়লের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগে মণিরামপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শাহিনের দোকানে অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। পরে ১৭ অক্টোবর তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাহিদ হোসেন জানান, তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের মতো ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া ও ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ গুলোও তারা খতিয়ে দেখবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামলা করার পাশাপাশি দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করা হবে।