অ্যাডিলেড: পুঁজি খুব বেশি ছিল না। তারপরও ওয়াহাব রিয়াজদের বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দেওয়ার সুযোগটা পেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ক্যাচ মিসের পুরনো রোগ জেগে উঠায় হতাশাই সঙ্গী হলো মিসবাহ উল হকের দলের।
অ্যাডিলেডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই জয় স্বাগতিকদের পৌঁছে দিল সেমিফাইনালে। আর পরাজয়ে শেষ হলো পাকিস্তানের বিশ্বকাপ। শেষ আট থেকেই বিদায় নিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান ৪৯.৫ ওভারে ২১৩ রানে অলআউট হয়। জবাবে ৩৩.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ২১৬ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। জস হ্যাজেলউড ম্যাচ সেরা হন।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের মতো ম্যাচে দুটি ক্যাচ মিস কত বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে তা পাকিস্তান ভালোই টের পাচ্ছে। ওই ক্যাচ দুটি ধরলে কী হতে পারতো সেই হিসেব নিশ্চয়ই করবে পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ৪ রানে শেন ওয়াটসনের ক্যাচ ফেলেছেন রাহাত আলী। সেই ওয়াটসন করেছেন অপরাজিত ৬৪ রান। ৫ রানে থাকা ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ ফেলেছেন সোহাইল খান। ইনিংস শেষে ম্যাক্সওয়েলের রানটা অপরাজিত ৪৪। ক্যাচগুলো কত মূল্যবান সেটিও দেখলো পাকিস্তানি ভক্তরা।
২১৪ রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া দলীয় ১৫ রানে অ্যারন ফিঞ্চের উইকেট হারায়। এরপর দুর্দান্ত এক স্পেলে স্বাগতিকদের ভড়কে দেন ওয়াহাব রিয়াজ। আগুন ঝরা বোলিংয়ে কিছুটা নড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ানরা। ২৪ রান করা ওয়াটসনকে ফেরান নবম ওভারে। ১১তম ওভারে ওয়াহাব রিয়াজের দ্বিতীয় শিকার হন মাইকেল ক্লার্ক। ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসা অসিদের ইনিংসের হাল ধরেন স্টিভেন স্মিথ ও ওয়াটসন। স্মিথ তুলে নেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ সেঞ্চুরি।
এহসান আদিলের শিকার হওয়ার আগে স্মিথ ৬৫ রান করেন। পঞ্চম উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ওয়াটসন ও ম্যাক্সওয়েল। ওয়াটসন ৩৩তম হাফ সেঞ্চুরি করেন।পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজ ২টি করে উইকেট পান।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানের শুরুটাই ছিল বিপর্যয়মুখর। ২৪ রানেই দুই ওপেনার আহমেদ শেহজাদ (৫) ও সরফরাজ আহমেদ (১০) সাজঘরে ফিরে যান। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মিসবাহ ও হারিস সোহাইল প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তারা ৭৩ রানের জুটি গড়েন। অস্ট্রেলিয়াকে ব্রেক থ্রু এনে দেন ম্যাক্সওয়েল। ৩৪ রান করে মিসবাহ ক্যাচ দেন ফিঞ্চের হাতে। দলীয় ১১২ রানে তরুণ হারিস সোহাইল আউট হলে চতুর্থ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
তিনি ৪১ রান করেন। এরপর উমর আকমল, শোয়েব মাকসুদ, শহীদ আফ্রিদিরা ব্যাট হাতে বিপ্লবী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। কয়েকটি আক্রমণাত্মক শটও খেলেছেন। কিš‘ কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। উমর আকমল ২০, আফ্রিদি ২৩, শোয়েব মাকসুদ ২৯ রান করেন। ওয়াহাব রিয়াজ করেন ১৬ রান।
শেষ দিকে এহসান আদিল ও রাহাত আলী ১৮ রানের জুটি গড়লে দুশো রান পার হয় পাকিস্তান। এহসান আদিলকে স্টার্কের ক্যাচ বানিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের লেজটা গুটিয়ে দেন ফকনার। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে হ্যাজেলউড ৪টি, স্টার্ক-ম্যাক্সওয়েল ২টি করে উইকেট নেন।