সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলনে সর্বাত্মক সহযোগিতার নির্দেশ ওবায়দুল কাদেরেরঢাকা :: কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ও নির্দেশনায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় গঠিত সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে সর্বাত্মক সহযোগিতার নির্দেশ প্রদান করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নবগঠিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক শওকত হোসেন কানন ধানমন্ডির ৩নং এ অবসি’ত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবাদুল কাদেরের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমকে এ নির্দেশ প্রধান করেন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিমের সভাপতিত্বে এক বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। এই বর্ধিত সভার সিদ্ধান্তের আলোকে শওকত হোসেন কাননকে আহ্বায়ক এবং আবু জাফর টিপুকে সদস্য সচিব করে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির  অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ডঃ জামাল উদ্দিন আহমেদ, এম দলিলুর রহমান, এএইচএম কাউসার, মোঃ জাফর উল্যাহ, মমিন উল্যাহ মানিক, জহিরুল আজম, শিহাব উদ্দিন শিহাব, মোঃ তৈয়ব আলী, ইয়াছিন আরাফাত, হুমায়ুন কবির রাজু, শাফায়েত হোসেন স্বপন, সাইফুজ্জামান স্বপন। ঘোষিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির ৫ জন করে মোট ১০ জনের সদস্যের নাম প্রস্তাব করেন সংসদ সদস্য আলহাজ মোরশেদ আলম ও নোয়াখালী জেলার আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক। বাকী ৪ জনের নাম প্রস্তাব করে জেলা আওয়ামী লীগ।

দেড় বছর পূর্বে আহ্বায়ক করে একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির গঠন করা হলেও ঐ কমিটি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। যার কারণে সেনবাগ আওয়ামী লীগে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। যে যার যার মত করে নেতা বনে যায়। ফলে সেনবাগে একাধিক গ্রুপের সৃষ্টি হয়। যার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবক’টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চরম ভরাডুবি ঘটে। এমন কি সদ্যসমাপ্ত জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচনেও দলীয় সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেনি।

এদিকে সেনবাগের অগোচালো রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিশেষ করে নোয়াখালী প্রতিদিনে বিশ্লেষণধর্মী একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দলের হাই কমান্ডের নজরে আসে বিষয়টি। ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে গঠিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে ঘিরে সেনবাগের রাজনীতির শুভ লক্ষণ দেখছেন অনেকে। নবগঠিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি নিয়ে সেনবাগের সর্বত্রই নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ দেখা দিয়েছে। পরস্পর পরস্পরকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছে। ২১ তারিখ রাতে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী বিশাল আনন্দ মিছিল বের করে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মোরশেদ আলম অমর একুশের কর্মসূচিতে যোগদানের লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন। গতকাল এমপি সমর্থক কিছু দলীয় নেতাকর্মী সেবারহাট ও সেনবাগ রাস্তার মাথায় বিক্ষোভের চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে তা তারা প্রত্যাহার করে নেয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের র্নিদেশনায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমের উপসি’তিতে গঠিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের প্রকৃত দলীয় সমর্থক নয় বলে দাবি করেছেন অনেকে। নবগঠিত প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব আবু জাফর টিপু নোয়াখালী প্রতিদিনকে বলেন- যারা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের উস্কানী দিচ্ছেন।

তারা মূলত চান না সেনবাগের রাজনীতির একটি গতি ফিরে আসুক। গতিহীন রাজনীতির সুবিধা নিতে তারা। ওবায়দুল কাদেরের কমিটি মানিনা, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি মানি না এমন সব শ্লোগান দিয়ে গোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন। আবু জাফর টিপু বলেন-সেনবাগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। দলের প্রয়োজনে সম্মেলন জরুরী তিনি সকলকে সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্য  নেতৃত্বে নির্বাচনে সহযোগিতার আহ্বান জানান। সম্মেলনে প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক শকত হোসেন কানন নোয়াখালী প্রতিদিনকে জানান, ইনশাল্লাহ আমাদের নবগঠিত কমিটি যথাসময়ে সম্মেলন সমাপ্ত করতে সক্ষম হবে।

এ লক্ষ্যে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন আওয়ামী লীগের একটা বড় দল। এ দলে নানাবিধ মত থাকতে পারে, কিন’ মতান্তর নাই। বিএনপি জামায়াত অধ্যুষিত সেনবাগের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান শক্ত করতে হবে সকল শতকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। দলের না থেকে বাহিরে বাহিরে থাকলে তো প্রকৃত নেতা নির্বাচন সম্ভব নয় শওকত হোসেন কানন সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সম্মেলনের লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। নবগঠিত সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি এবং সম্মেলন প্রসঙ্গে নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি এ সংসদীয় আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক বলেন, আমরা কে এমপি হব, কে নেতা হব তা নির্ভর করবে সাংগঠনিক দক্ষতার উপর। সংগঠন যদি না থাকে, দল যদি না থাকে, তা হলে কিভাবে নেতা হবেন? দলের প্রয়োজনে এ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

হাইকমান্ডের নির্দেশে গঠিত এ সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে সেনবাগ আওয়ামী লীগকে তৈরী করতে হবে, বিএনপি-জামায়াতের সাথে লড়াই করে এ আসন উদ্ধারে। আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক বলেন- ডঃ জামাল সাহেব জয়নাল আবেদিন ফারুকের সাথে লড়াই করে ৭০ হাজার ভোট পান। এর কারণ  হল তার ইমেজ ব্যক্তিত্ব সর্বোপরি প্রতি ইউনিয়নে তার নিজস্ব কর্মী বাহিনী ছিল। কিন্তু সেবার যদি দলের সব নেতা ডঃ জামালকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়তেন তাহলে তিনি নির্বাচিত হতে পারতেন।

এ প্রসঙ্গে আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক আরও বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত, তাই তার জনপ্রিয়তা যাচাই করা সম্ভম নয়। তবে ইউনিয়ন নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদ তার মনোনীত সব চেয়ারম্যান প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় সংসদ সদস্যের জনপ্রিয়তার ইঙ্গিত বহন করে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, গত ৪ বছর কোন ইউনিয়নে দলের কমিটি নাই। যদি কমিটি থাকত, তাহলে ইউনিয়ন নির্বাচনের ফলাফল অন্যরকম হতে পারত।

এ প্রসঙ্গে আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে বিএনপির শক্তিশালী কমিটির রয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে হবে। এ জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দল টিকলে মোরশেদ সাহেব জামান সাহেব কিংবা আমি মানিক যাকে দলের হাইকমান্ড মনোনয়ন প্রদান করেন তিনিই নির্বাচিত হতে পারবেন। সুতরাং সকলের উচিত দলের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিকে সহযোগিতা করে একটি সফল সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মী-বান্ধব নেতৃত্ব নিশ্চিত করা। যারা আগামীতে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবে।- প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here