ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে উদ্ধাবনকৃত সুবললতা ধান কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
ইতোমধ্যে এ ধান ফলনের দিক থেকে হরিধান, আফ্রিকা থেকে আনা নেরিকা জাতের ধানকে টপকিয়ে গেছে।
এবারো বাম্পার ফলনের কারনে ধানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে কৃষকদের মুখে মুখে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকার কৃষকেরা অভাবনীয় সাফল্যের কারনে কৃষক সুবলের নাম দিয়ে রাখে সুবললতা ধান। তবে এ ধান ব্যাপকভাবে চাষ হলেও ধান উদ্ভাবন সম্পর্কে মানুষের অজানা রয়ে গেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আহসান নগর গ্রামে কৃষক সুবল ২০০৬ সালের দিকে এ ধান উদ্ভাবন করেন। ওই বছর তিনি তার জমিতে কাজল লতা ধান চাষ করেন। এ ধানের মধ্যে ১টি ধানের শীর্ষ খুবই পুষ্টিকর হয়। সেই ধান থেকে ২০০ গ্রাম ধান সংগ্রহ করেন। পরে ওই ধান বোরো মৌসুমে ১শতক জমিতে চাষ করে ১মন বীজ উৎপাদন করেন। এরপর গ্রামের ১৪/১৫ জন কৃষকদের মধ্যে ধান বিতরন করেন। শুরু হয় বিপ্লব। ছড়িয়ে পড়ে জেলা থেকে অন্যা জেলায়।
বর্তমানে ঝিনাইদহ চুয়াডাঙ্গা,মেহেরপুর,যশোর ও মাগুরা সহ প্রায় ৮ জেলার এ ধান ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। সুবললতা ধান চাষে উৎপাদন খরচও একেবারে কম। আয়ুকাল ১২০দিন ।
অন্যান্যে ধানের তুলনায় সার, কীটনাশক কম লাগে। ফলনের দিক থেকে লাভ হয় বেশি। বিঘা প্রতি জমিতে ৩০ থেকে ৩২ মনের কাছাকাছি ধান পাওয়া যায়। ঝড় ও দুর্যোগে মোকাবেলা ক্ষমতায় রয়েছে এ ধানের। এর উচ্চতা ৮৫-৯০ সেন্টিমিটার, গাছ শক্ত হয়, চিটা হয় কম।এ ধানের চালও চিকন, ভাত খেতেও খুব সুস্বাদু।
ধান চাষ নিয়ে কথা হয় আহসান নগর গ্রামের কৃষক অধীর বাবু সাথে তিনি জানান, আমার ৪ বিঘা জমিতে এবার এ ধান চাষ করেছি। কাটা শুরু হয়েছে। বাম্পার ফলন হচ্ছে।
এছাড়া একাধিক কৃষক সুবলধানের গুনকৃতনের কথা উল্লেখ করে জানান, সুবল বাবু এ ধান উদ্বাবন না করলে হয়তো এলাকায় ধান চাষ অনেকটা হ্রাস পেত।
এ ব্যাপারে কৃষক সুবল বলেন, আমার নামের এ ধানের সাফল্যর কারনে আমি গর্বিত। এ ধান আরো যাতে দেশব্যাপী ছড়িয়ে যায় তার জন্য সরকারী-বেসরকারী পৃষ্টপোষকতার দাবি করছি। সেই সাথে আবিস্কারক হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায়। তিনি বাংলাদেশের ধান গবেষকদের এলাকা পরিদর্শনের আমন্ত্রন জানান।
এ ব্যাপারে সাধুহাটি ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ ধান এতো জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে যে সাধুহাটি ইউনিয়নের প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে এ ধান চাষ করা হয়েছে। এছাড়া এ ধান অধিকহারে ফলন হওয়ায় এ বছর জেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে এবার চাষ হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
তিনি আরো জানান, আমন মৌসুমের তুলনায় ইরি-বোরো মৌসুমে আরো বেশি ফলন হয়।
আহমেদ নাসিম আনসারী/