াাোোমুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি:: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চর আমানউল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের মোহাম্মদ মিজানুর রহমান নামে এক ইংরেজী শিক্ষককে পাঠদান চলাকালীন সময়ে লাঞ্ছিত করেছে অনিয়মিত এক শিক্ষার্থী ও তার বড় বোন।

বুধবার সকাল পৌনে এগারটার দিকে উপজেলার চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীর প্রথম ঘন্টার পাঠদানকালীন সময়ে শ্রেণীর কক্ষের ভিতরে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম সাইফুল ইসলাম (দশম শ্রেণী মানবিক শাখা শিক্ষাবর্ষ ২০১৫-১৬ ) ও তার বড় বোন নুর নাহার একই ইউনিয়নের দপাদার মো: সিরাজ মিয়ার সন্তান।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার পূর্বে চুড়ান্ত নির্বচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষাথীদের আগামী ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করানোর লক্ষ্যে আলাদা ভাবে পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে সাইফুল ইসলাম বিদ্যালয়ে প্রায় অনিয়মিত থাকেন। প্রতিদিনের মত সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান দশম শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের হাজিরা ডাকেন।

হাজিরা ডাকার এক পর্যায়ে সাইফুল ইসলাম হাজিরা দিলে শিক্ষক অনিয়মিত থাকায় তাকে দাঁড়াতে বলে। সে না দাঁিড়য়ে শিক্ষকের দিকে চোখ রাঙিয়ে উঠে এবং শিক্ষককে গালমন্দ করলে শিক্ষক তাকে অভিভাবক নিয়ে আসতে বলে। অভিভাবক নিয়ে আসতে বলায় সাইফুল শ্রেণী কক্ষ থেকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বেরিয়ে যায়। সে বেরিয়ে যাওয়া পরপর তার বড় বোন নুর নাহার পাঠদান চলাকালীন সময় শ্রেণী কক্ষে ডুকে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সামনে পায়ের জুতা খুলে এলোপাতাড়ি মারধর ও গালমন্দ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বেঞ্চ থেকে বেরিয়ে সাইফুল ও তার বোন নুর নাহারকে দাওয়া করলে সে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার সাথে সাথে বখাটে সাইফুল ও তার বোন নুর নাহার এর বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে এবং শ্রেণী কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও শ্রেণীকক্ষের তালা না খোলার ঘোষনা দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আবু ওয়াদুদ অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার করার ঘোষনা দিলে বিক্ষোভ কারী শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষে ফিরে যায়। উদ্ভট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে দুপুর আড়াইটার দিকে সহকারী প্রধান শিক্ষক স্কুল ছুটি ঘোষণা করেন।

বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারী দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাব্বী ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন জানান, আমাদের চোখের সামনে আমাদের প্রিয় শিক্ষককে মারধর করা হলেও শিক্ষকের অনুরোধে আমরা অপরাধীদের কিছুই করতে পারিনি। এ ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি। অন্যথায় আমরা ছাত্র সমাজ বসে থাকবো না।

বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সুবর্ণচর শাখার সভাপতি মো: সামচ্ছুজ্জামান নিজাম ও সাধারাণ সম্পাদক মো: গোফরান উদ্দিন বলেন, এটি একটি নেক্কার জনক ও ঘৃনিত ঘটনা। শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সুবর্ণচর শাখার পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং উপজেলা প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।

উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষা পূর্বচুড়ান্ত বাচাই পরীক্ষায় সাইফুল ইসলাম কৃতকার্য না হওয়ায় সে ফরম পুরণ করতে না পারায় উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র দাস কে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। হুমকি দেওয়ার ঘটনা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যন মো: বেলায়েত হোসেন গ্রাম্য আদালতে প্রকাশ্যে সাইফুল ইসলামের বিচার করে তাকে শারীরিক শাস্তি ও আর্থিক জরিমানা করে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here