কামরুল হাসান, কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি :: বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার শ্রী সন্দীপ চক্রবর্তী বলেছেন, সাতক্ষীরাবাসীর জন্য ভিসা ব্যবস্থা সরল করা হবে।
বাংলাদেশের লোকেরা ভারতের সাথে বিভিন্ন সম্বন্ধ বানাতে চায়। ভারত ও বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম দেশ। এ দুদেশের মানুষের সম্পর্ক প্রাণের সম্পর্ক। আত্মীয়তার সম্পর্ক।
বিশ্বে এমন কোনো দেশ নেই, যাদের সম্পর্ক এতো ঘনিষ্ট, এতো আন্তরিক। তিনি বলেন, এদেশের মানুষের আত্মীয় ওপারে(ভারত) আছে, আবার ওপারের মানুষের আত্মীয় এপারে(বাংলাদেশ) আছে।
তাই এ সম্বন্ধের জন্যই ভিসার দাবি অনেক বেড়ে গেছে। আর এজন্যই প্রয়োজন ভিসা ব্যবস্থা সরল করার। ভিসা ব্যবস্থা যাতে সরল করা যায়, শীঘ্র সে কাজ করা হবে।
তিনি রোববার রাতে কলারোয়া ফুটবল ময়দানে ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ এর এক বিশাল গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার আরও বলেন, সাতক্ষীরা ও কলারোয়ার মানুষ যেনো মনে করেনা, তারা একলা। পুরো বাংলাদেশ, পুরো ভারত আপনাদের সাথে আছে।
আমার মনে হয় এখানে জঙ্গীবাদ জায়গা পাবে না। জঙ্গীবাদ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, পুরো বিশ্বকে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। জঙ্গীরা মানবাধিকার মানে না, ধর্ম মানে না, রাষ্ট্র মানে না।
এরা জানে কীভাবে অস্থিরতা করতে হয়। ভারত-বাংলাদেশ জঙ্গীবাদ নির্মূলে একসাথে কাজ করে যাবে। কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান, সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, আনন্দবাজার পত্রিকার চিফ সাব এডিটর অনমিত্র চ্যাটার্জি, নারী নেত্রী নাসরিন খান লিপি প্রমুখ।
ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার শ্রী সন্দীপ চক্রবর্তী আরও বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে একটি উন্নত দেশ হিসেবে দেখতে চাই। কেননা, বাংলাদেশ উন্নয়নে বিশ্বাস করে, প্রগতিতে বিশ্বাস করে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত ও বাংলাদেশ এক সাথে কাজ করছে। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম স্বাধীন হয়েছিলো সাতক্ষীরা। মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলো।
ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে। ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার শ্রী সন্দীপ চক্রবর্তী তাঁর কাছে যে কোনো সংবাদ পৌঁছানোর জন্য সংসদ সদস্যের মাধ্যমে প্রেরণের কথা বলেন।
তিনি যথাসাধ্য সেই সংবাদের জবাব দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, জঙ্গীবাদ যেকোনো মূল্যে নির্মূল করতে হবে। এদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করে দেয়া দরকার।
তিনি সাতক্ষীরাকে মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ‘যুক্ত কর হে সবার সঙ্গে, মুক্ত কর হে বন্ধ’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে হওয়া এই গণসমাবেশে মানুষের ঢল নামে।
অসম্প্রদায়িক প্রগতিশীল কলারোয়া গড়ার দীপ্তি ছিলো প্রতি মানুষের চোখে-মুখে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু গণ সমাবেশ ময়দানে উপস্থিত হওয়া মানুষকে তাদের উপস্থিতি জানান দেয়ার জন্য নিজ নিজ মোবাইল ফোন জ্বালাতে বললে আলোর রোশনাইয়ে যেনো কেটে যায় রাতের সব অন্ধকার।
আলোচনা শেষে পরিবেশিত হয় বাপ্প্া মজুমদারের ‘দলছুট’ ও অন্যান্য কলাকুশলীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।