লক্ষ্মীপুরে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুর জেলার চাষীরা অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে। কারণ এ ফসলে সামান্য পরিচর্যা করলেই চলে, আর অল্প খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায়। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজু চৌধুরীর হাট এলাকার মেঘনা নদী উপকূলের চর রমনী মোহন ও ভবানীগঞ্জ এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে চাষ হয়েছে সরিষার। এখানকার কৃষকরা এখন অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষে ব্যাস্থ সময় পার করছে।

চর রমনী মোহন ও ভবানীগঞ্জ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হলুদ আর হলুদ। দু’চোখ যেদিকে যায় সেদিকেই সরিষার হলুদ রঙের ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে সরিষা ক্ষেত। এক দিকে মেঘনা নদী অন্য দিকে সরিষা ফুলে হলুদের সমারোহ। মৌমাছি আর প্রজাপতির আনা-গোনায় সরিষা মাঠ গুলো হয়ে উঠেছে মনোমুগ্ধকর।

চর রমনী মোহন এলাকার সরিষা চাষী ইসমাইল মিয়া, আকবর আলী ও হেদায়েত উল্যা বলেন, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যাক্ত থাকে। আর সেই জমিতেই অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করেছি আমরা। আমাদের মত অনেক কৃষক সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগ-বালাই না হওয়ায় এবার ভাল ফলনের আশা করছেন তারা।

ভবানীগঞ্জ এলাকার সরিষা চাষী হেলাল উদ্দিন, আহম্মদ মিয়া ও আবু তালেব বলেন, কয়েক বছর আগেও তাদের জমি পরিত্যাক্ত থাকতো, কিন্তু বর্তমানে কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা এখন বোরো ধানের আগে জমিতে সরিষা চাষ করছেন। বোরো ধান চাষের আগে সরিষা চাষ করে বাড়তি আয় হওয়ায় দিন-দিন সরিষা চাষে এ অঞ্চলের কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। সরিষার ফুল মাটিতে পড়ে জমির উবরর্তা শক্তি বাড়ায়। তা ছাড়া সরিষার বাজার দরও ভালো হওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ২৫৮ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৫৮ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে। তার মধ্যে লক্ষ্মীপর সদর উপজেলায় ৬৭ হেক্টর, রায়পুর উপজেলায় ১৬০ হেক্টর, রামগঞ্জ উপজেলায় ১৫ হেক্টর, রামগতি উপজেলায় ৫ হেক্টর ও কমলনগর উপজেলায় ১১ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪১৫ মেক্টিকটন ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান বলেন, সরিষার আবাদ দিন দিন এই জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ২৫৮ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় কৃষকরা সঠিক ভাবে সরিষা আবাদ করতে পেরেছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে চাষীরা সরিষা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন। কৃষকদের বাড়তি আয়ের জন্য সরিষার এই সব ক্ষেতে মধু আহরণের জন্য মৌ-বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here