সরাইল: সরাইলে এক তরুনী খুন হয়েছে। তার নাম ফারজানা আক্তার ময়না(১৯)। সে পাকশিমুল ইউনিয়নের কালীশিমুল গ্রামের নূরুল ইসলামের মেয়ে।

সকালে সরাইল-অরুয়াইল সড়কের কালীশিমুল গ্রামের এক গোরস্থানের পাশে ময়নার লাশ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামের মানুষ। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। লাশের সুরতহালকারী পুলিশ কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর ফরহাদ আব্বাস জানিয়েছেন ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি।

তবে থুতনিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলায় টাইট করে ওড়না বাঁধা। পড়নের সেলোয়ার দিয়ে বাঁধা তার দু’পা। ময়নার পরিবারের সদস্যরাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কিভাবে তার মৃত্যু হলো।

ময়নার পরিবার ও গ্রামবাসী জানায়, নূরুল ইসলাম প্রথম বিয়ে করেন অরুয়াইল ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের আছিয়া খাতুনকে। ১৬ বছর আগে মারা গেছে আছিয়া। ময়নারা তিন বোন এক ভাই। সে সবার ছোট।

বড় দুই বোন শাম্মি আক্তার (৩০) ও ফারহানা আক্তারের (২৫) বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। তারা থাকেন স্বামীর বাড়িতে। বড় ভাই মাওলানা দেলোয়ার মিয়া (৩০) ঘটনার রাতে ছিলেন তার কর্মস্থল নরসিংদীতে।

ময়নার পিতা দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন চুন্টা গ্রামের বকুল নেছাকে। পারিবারিক কলহের কারনে বকুল নেছা পাঁচ মাস আগে ছোট মেয়ে সনিয়াকে (০৫) সাথে নিয়ে  একেবারে চলে গেছেন বাবার বাড়িতে। পিতা নূরম্নল ইসলাম,ময়না আর তার সৎ ছোট বোন জরিনা আক্তার (১০) ও ভাই মনির হোসেন (০৭) একই ঘরে থাকতেন। গত সোমবার রাতে গ্রামের মাদারী বাড়িতে ওরস উপলড়্গ্যে মেলা জমেছিল। সেখানে ছিল বাউল গান।

ময়নার বাবা মেলা থেকে গভীররাতে বাড়ি ফিরে মেয়ের খোজ না করেই ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে খবর পান তার মেয়ের লাশ বাড়ির অদূরে কিশোর মামুদের গোষ্ঠীর কবরস্থানের পাশে পড়ে রয়েছে।

ময়নার ভাই মাওলানা দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন ৩ মাস আগে ময়নাকে একবার অপহরন করা হয়েছিল। এই অপহরনের নায়ক ছিলো চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামের আলফাজ মিয়া (৪২)। তখন থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল। ময়নার এখনকার পরিণতির জন্যে আলফাজকেই সন্দেহ করছে দেলোয়ার।

অপহরন করে নেয়ার ১২ দিন পর সরাইল থেকে পরিবারের সদস্যদেরকে ফোন করে নিজের অবস্থান জানিয়েছিল ময়না। তখন পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে। কিন্তু সে কিভাবে অপহ্নত হয়েছিল,কারা তাকে অপহরন করেছিল এসবের কিছুই তখন জানাতে পারেনি সে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ শাহ আলম বকাউল। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলী আরশাদ বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে ধর্ষনের চেষ্টার পর হত্যা করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মোহাম্মদ মাসুদ/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here