খোরশেদ আলম বাবুল, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের সখিপুর বাজারে স্থাপিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি বন্ধ হতে চলছে। শিক্ষা উপকরণ শ্রেণিকক্ষ, টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ, ইত্যাদির অভাবে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ক্লাস রুম চালু হলেও প্রতিবন্ধীদের এ প্রতিষ্ঠানটি আজও এই ব্যবস্থার বাইরে রয়েছে।
জানা যায়, ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ জমিতে ৪০ জন শিক্ষার্থী আর ৬ জন শিক্ষক নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালু করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর স্থানীয় উদ্যোগে এটি পরিচালিত হয়ে থাকলেও ২০১৬ সালের জুন মাসে সমাজসেবা মন্ত্রনালয় কতৃক পরিচালিত “সুইড বাংলাদেশ” দায়িত্বভার গ্রহণ করে।
প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানে অসামান্য অবদানের জন্য ভেদরগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত “ডিজিটাল উন্নয়ন মেলা-২০১৭ তে পুরস্কার লাভ করে বিদ্যালয়টি।
অভিভাবকদের সাথে আলাপ কালে বলেন, এ স্কুলে উপবৃত্তি কিংবা স্কুল ফিডিং চালু করা হয়নি। অথচ আশ-পাশের প্রাথমিক স্কুল গুলোয় এসব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের স্ট্যান্ড সাইকেল, প্যারালালবার, পিটি প্যারেডের জন্য ঢোল, হারমোনিয়ামসহ অন্যান্য সামগ্রী না থাকায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘক্ষণ স্কুলে থাকতে চায় না। ভাঙাচোরা ঘরে পর্যাপ্ত টেবিল, চেয়ার না থাকায় গাদাগাদি করে বসে কাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
প্রায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন ৮০টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে নাতিকে নিয়ে বিদ্যালয়ে উপসি’ত হই। ভাল হাটতে পারেনা তবুও যাওয়ার সময় হেটে যাই। কি আর করার অত টাকা কোথায় পামু। একটি গাড়ি দিলে কষ্ট কম হইতো।
বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ফোরদাউস সরদার জানায়, ২০১৪ সালে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নিজের অর্থায়ণে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করলেও সরকারি তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা আমরা পাইনি। বিভিন্ন বেসরকারী সাহ্যায্য সংস্থার সহযোগিতায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম। নানা সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মাহফুজুর রহমান জানায়, ৬ জন শিক্ষকদের দ্বারা বিদ্যালয়টি পরিচালিত হলেও তাদের বেতন ভাতা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছি আমরা। তিনি বলেন, সরকারি সাহযোগিতা না পেলে বিদ্যালটির কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ার ঝুকি কমবে। পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ না থাকায় লেখাপড়ায় ব্যঘাত ঘটছে।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শ্যামল পান্ডে জানান, সরকারি বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যালয়টিকে আমরা নূন্যতম সহযোগিতাও করতে পারিনি। তবে আমাদের পক্ষ থেকে যথাসম্ভ তাদেরকে উৎসাহিত করে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল আহমেদ বলেন, আমি জানি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে স্কুলটি। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয়টির জন্য সরকারি ভাবে ভবন হবে শীঘ্রই।