সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্যাহ
সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্যাহ

জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: মেঘনার কোল ঘেসে গড়ে উঠেছে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা দুটি। মেঘনা নদীর ভাঙ্গাগড়া নিত্তসঙ্গি যাদের, কৃষি আর মৎস্য তাদের প্রধান পেশা। লেখা-পড়ায় পিছিয়ে জেলার অন্য উপজেলার ছেয়ে। একদিকে নদী ভাঙ্গা অন্য দিকে চরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল নাজুক। শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল অন্ধকারে। কৃষি যাদের প্রধান পেশা দিন দিন নদী ভাঙ্গার কবলে পড়ে তাদের হতে হয়েছে সর্বহারা।

অপর দিকে যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুকের কারণে কৃষিতে ভালো ফলন ফলাবার পরেও পাওয়া যেতোনা আশানুরূপ সাফল্য। চরের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে ছিল হাতে গনা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই কারণে শিক্ষার হার ছিল একেভারে কম। সরকার আসে সরকার যায়, এক এক সরকারের সময় এক এক জন এমপি নির্বাচিত হন।

অনেক সময় এক একজন এমপি দুবারও ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু রামগতি ও কমলনগরের চর অঞ্চলের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নী বিন্দু পরিমাণও। নির্বাচনের আগে দিয়েছিলেন নানা প্রতিশ্রুতি কিন্তু রাখেননি তার কোন কথা। স্বাধীনতার পরে এই এলাকা থেকে এমপি মন্ত্রী হয়েছেন অনেকে। কিন্তু পরিবর্তন হয়নি এই দুই উপজেলার মানুষের। কোথাও উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনী। উন্নয়ন কি এই এলাকার মানুষের তাও বোধগম্য ছিল না। মানুষ ছিল বঞ্চিত, নিপিড়িত, অবহেলিত ও প্রতারিত।

তবে এই সব কথা এখন অতিত, উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে রামগতি ও কমলনগর উপজেলায়, উন্নয়ন হয়েছে অনেক। হাতে ঘোনা উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে উপজেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত চর অঞ্চলেও। নদী ভাঙ্গন রোধ হয়েছে, ফলে কৃষি ও মৎস্যজীবি সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থায়ও বেড়েছে শিক্ষার হার।

২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলেও এই এলাকায় এমপি নির্বাচিত হন বিএনপি থেকে আর সংরক্ষিত আসনে এমপি হন আওয়ামীলীগ থেকে কিন্তু উন্নয়ন হয়নি এই এলাকার।

পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে ২০১৪ সালে আওয়ামীলীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর। তার মূল কারীগর বর্তমান এই আসনের সংসদ সদস্য লক্ষ্মীপুর-৪ রামগতি-কমলনগরের এমপি মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন)। বিশিষ্ট শিল্পপতি আবদুল্যাহ (আল-মামুন) কে ২০১৪ সালে ৫জানুয়ারী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তখন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন তিনি।

স্বপ্ন দেখান নদী ভাঙ্গা এই অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষিজীবি সাধারণ মানুষকে। তার কথা যেন যাদু মাখা, মানুষ পড়ে যান তার প্রেমে। এতো দিনের ক্ষোভ আর অভিমান ভূলে ঐক্যবদ্ধ হন নৌকার পক্ষে। নির্বাচনে সকল প্রতিকূল অবস্থাকে উপেক্ষা করে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন) কে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন।

নির্বাচিত হওয়ার পর অন্য নির্বাচিতদের পথ না ধরে নিজের ওয়াদামত প্রতিশ্রুতি গুলো বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় বদলে যেতে থাকে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা দুটি। উন্নয়ন থেকে বাদ পড়েনি কোন কিছুই। নদী ভাঙ্গন রোধ, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির নির্মাণ, খাল-খনন, বিদ্যুৎসহ প্রায় সব কিছুই করেছেন এই এলাকার সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী।

সবছেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে যে মেঘনা নদী দিন দিন ঘিলে খাচ্ছিল এই দুই উপজেলাকে, ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছিলো হাট-বাজার, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, মসজিদ মাদ্রাসাসহ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল ঘর-বাড়ী। নদী ভাঙ্গন রুখতে কথা দিয়েছেন অনেকে কিন্তু কথা রাখেননি কেউ। তাই তো নির্বাচিত হওয়ার পরে মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন) প্রথমে নিজ উদ্যোগে জিয়ো ব্যাগ ব্যবহার করে দিয়েছিলেন নদীর তীর রক্ষা বাঁধ।

পরে সংসদে বার-বার তুলে ধরেছেন এই অঞ্চলের নদী ভাঙ্গার কথা। বিভিন্ন সময় ছুটে গিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। তাতে সফল হয়েছেন তিনি, প্রধানমন্ত্রী নদী ভাঙ্গন রোধে দিয়েছিলেন বড় আকারের বরাদ্ধ। প্রথম পর্যায়ে দেওয়া হয় ২০০ কোটি টাকা। সরকারী বরাদ্ধের প্রথম ধাপের টাকায় রামগতির আলেকজান্ডার বাজারের উপর ও কমলনগরের মতির হাট এলাকায় দেওয়া হয় ভাঙ্গন প্রতিরোধক বাঁধ।

এছাড়া ২য় পর্যায়ের কাজও খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে বলে জানা গেছে। এতে স্থানীয়রা আশা করছেন তাদের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্যাহর নেতৃত্বে নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে উভয় উপজেলা মানুষ। তাইতো স্বাধীনতার পরে যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন) এর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট স্থানীয় আপামর জন-সাধারন।

শুধু উন্নয়নে তার কর্মকান্ড সিমাবদ্ধ রাখেননি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন) নিজেকে। এলাকার সার্বিক কর্মকান্ড নিজ হাতে পরিচালনা করছেন। নির্বাচিত হওয়ার পরে সন্ত্রাস কবলিত এই দুই উপজেলাকে সন্ত্রাস নির্মূল করতে জেলা পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা করে দুই উপজেলাকে সন্ত্রাস মুক্ত করেছেন। নিজ দল আওয়ামীলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে এই আসনে টানা দুইবার সংসদ সদস্য ছিলো বিএনপি দলীয়। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলেও এখানে এমপি নির্বাচিত হন বিএনপি থেকে। দল ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের থাকতে হতো কোনঠাষা হয়ে। তাই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ করে নৌকাকে বিজয়ী করেছেন।

পরে এমপি নির্বাতি হওয়ার পরে মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন) আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শক্তি, সমর্থন বৃদ্ধি করতে কাজ করেছেন নিরন্তর। নেতা-কর্মীদের উজ্জিবিত করতে প্রতিটি সমাবেশে উপস্থিত থাকছেন, বক্তব্যের মধ্যে তুলে ধরছেন বর্তমান সরকারে সাফল্য ও উন্নয়ন কর্মকান্ড। নেতা-কর্মীদের পাশে রেখেছেন সরকারের প্রতিটি উন্নয়ন কর্মকান্ডে। এতে আবদুল্যাহ (আল-মামুন) এর নেতৃত্বে স্বাধীনতার পর যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক সু-সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ দলে পরিণত হয়েছে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন গুলো।

রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার বাজারের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির, আবদুস ছাত্তার, মো. ইব্রাহিম ও কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী, আলমগীর হোসেন, আবু তাহেরসহ অনেকে জানান, স্বাধীনতার পরে ৪১ বছরে এই এলাকায় যে উন্নয়ন হয়নি তা বর্তমান এমপি আবদুল্যাহ (আল-মামুন) এর ৫বছরের হয়েছে। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরে এই এলাকার নদী ভাঙ্গা, আইন শৃঙ্খলা, রাস্তাঘাট, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য প্রধান সমস্যা গুলোকে চিহ্নিত করে সমাধান করেছেন। তাদের ভাষায় রামগতি ও কমলনগর উপজেলার উন্নয়নের রূপকার বর্তমান এমপি মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন)।

রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ ও রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেজবা উদ্দিন হেলাল (ভি পি হেলাল) বলেন, আবদুল্যাহ (আল-মামুন) এই আসনে আওয়ামীলীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে পাল্টাতে থাকে স্থানীয় আওয়ামীলীগসহ সহযোগীসংগঠন সমূহের অবস্থা। নির্বাচিত হওয়ার পরে বিভক্ত দল’কে সংগঠিত করেছেন তিনি। দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে বর্তমান সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড পৌঁছে দিয়েছেন সাধারণ মানুষের ঘরে-ঘরে।

এছাড়া আগামী নির্বাচনে এই আসনে নৌকাকে জয়-লাভ করার জন্য নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমান এমপি মোহাম্মদ আবদুল্যাহ (আল-মামুন)।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here