সংবাদ প্রকাশ না করায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা!আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :: সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিকদের নামে বিভিন্ন মামলার কথা অনেকের জানা থাকলেও এবার সংবাদ প্রকাশ না করার দায়ে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

দৈনিক মানবজমিনের আদিতমারী প্রতিনিধি গোলাপ মিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন নারী উন্নয়ন প্রকল্পের প্রশিক্ষক ও উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের দেওডোবা  গ্রামের গনেশ চন্দ্র বর্মনের মেয়ে শ্যামলী রানী।

সাংবাদিক গোলাপ মিয়া বলেন, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস অফিস সংলগ্ন জনৈক নুর মোহাম্মদ এর বাসা ভাড়া নিয়ে অপরিচিত ৬ যুবক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থার ব্যানারে “নারী উন্নয়ন প্রকল্প” নামে একটি অফিস খুলেন। তারা ৫ প্রকার হস্তশিল্পের কাজ শেখানোর কথা বলে এলাকার ৩৫ জন শিক্ষিত বেকার নারীকে তাদের কার্যক্রমের প্রশিক্ষক হিসেবে মাসিক ৮ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দেন।

প্রতিজন প্রশিক্ষকরা স্ব-উদ্যোগে ১৫টি করে দল গঠন করেন। প্রতিটি দলে কমপক্ষে ৩০ জন করে সদস্য ভর্তি করা হয়। প্রত্যেক সদস্যদের ভর্তির জন্য এক হাজার ৪শ ৩০ টাকা করে আদায় করে তারা সংগঠনটির কর্মকর্তাদের নিকট জমা করেন।

এদিকে ৫ মাস অতিবাহিত হলেও সদস্যদের প্রশিক্ষণ না দিয়ে হঠাৎ করে ১০ মে প্রায় আড়াই কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় নাম সর্বস্ব সংগঠনটি।

এ ঘটনার পর ওই সংগঠনের প্রশিক্ষক আদুরী বেগম বাদি হয়ে ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ তার অভিযোগটি আমলে না নিয়ে গত ১৪মে অপর এক প্রশিক্ষক সুমনা রানীকে বাদি করে মামলা গ্রহণ করেন। আর এ মামলায় রহস্য জনক কারনে আমাকে সাত নম্বর আসামী করা হয়।

ওই প্রকল্পের প্রশিক্ষক মামলাটির স্বাক্ষী সবুজা বেগম বলেন, আমি একদিন ওই সাংবাদিককে ওই অফিসে ছবি তুলে তথ্য নিতে দেখেছি। কিন্তু এমন ভুয়া সংগঠনের তথ্য জেনেও সংবাদ প্রকাশ না করাটা সাংবাদিকের জন্য অপরাধ। তাই তাকে এ মামলায় সাত নম্বর আসামী করা হয়েছে।

মামলার আরেক স্বাক্ষী পারভীন সুলতানা জানান, সংগঠনটির কর্মকর্তাদের সাথে সাংবাদিকের সক্ষতা ছিল। তাই মামলায় তাকে আসামী করা হয়েছে। ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বাদিকে ক্ষতিপুরন দিলে তার নামটা মামলা থেকে বাদ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

মামলার বাদি সুমনা রানী বলেন, ‘সাংবাদিককে আমি চিনি না জানিও না। ওই মামলার কাগজে আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলা হলে স্বাক্ষর করেছি মাত্র’। এর বাইরে কোন কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত ফিরোজ কবির বলেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী মামলা বিষয়ে যা বলার অফিসার ইনচার্জই বলবেন।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হরেশ্বর রায় জানান, মূল আসামীদের বিরুদ্ধে বাদী কাগজ কলমে কোন গুরুত্বর্পূর্ণ তথ্য দেখাতে পারেননি। এছাড়াও সাংবাদিক গোলাপের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোন তথ্য-প্রমাণ দাঁড় করাতে পারেনি তারা। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here