বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নজরুল ইসলাম হলের সংঘর্ষের ঘটনায় দুই ছাত্র সুজিত ও মিঠুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে সোমবার রাতে বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তিন ছাত্রের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করলেও তাদের মধ্যে দুজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- মেটেরিয়াল অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল বিভাগের ২০০৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল্লাহ সিকদার মিঠুন এবং সুজিত সাহা। দুজনই ছাত্রলীগকর্মী বলে ছাত্ররা জানিয়েছে।
এই দুজনসহ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০০৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফ রায়হান দ্বীপকে রোববার ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তবে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে রাতভর বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকালে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটি। বৈঠকের পর উপউপাচার্য হাবিবুর রহমান দুই শিক্ষার্থী মিঠুন ও সুজিতকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
২৮ ডিসেম্বরে বুয়েটের বিদায়ী ব্যাচ আয়োজিত কনসার্টে কথা কাটাকাটির জের ধরে শনিবার দুপুরে নজরুল ইসলাম হলের ২০১ (ক) কক্ষের আবাসিক ছাত্র তৌসিফ আহমেদ ঈসানকে ব্যাট ও রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।
সুজিত ও মিঠুন ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের কর্মী। তাদের বিষয়ে সংগঠন থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন এই সংগঠনের বুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক তন্ময় আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংগঠন তাদের দায় নেবে না।”
ঈশান রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসা ব্যয় বহনের ঘোষণা দিয়েছে।
ঈশানকে মারধরের জন্য সুজিত, মিথুন ও দ্বীপকে দায়ী করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর রোববার মিঠুন, সুজিত ও দ্বীপকে রোববার ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। ডিসিপ্লিনারি কমিটির ওই সভায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।
কিন্তু ওই তিন জনের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রোববার দুপুর থেকে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। তারা রাতভর সেখানে অবস্থানের পর সকালে মিছিল করে। তবে কার্যালয়ে দু’জনের কেউই ছিলেন না।
বাইরে বিক্ষোভের মধ্যেই সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির বৈঠক শুরু হয়। উপাচার্যের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা দুজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থান নিয়ে রয়েছেন। তারা বলছেন, বহিষ্কারের লিখিত আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত অবস্থান ছাড়বেন না তারা।
এদিকে ক্যাম্পসের পরিস্থিতি শান্ত রাখতে বিভিন্ন ফঠকে এবং হলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/স্টাফ রিপোর্টার