ইলিয়াছ হিমেল :: চেতনার গায়ে অাগুন লাগতো যদি ভাস্কর্যের নুনু কাটা হতো, ভাস্কর্যের শাড়ী খুলে লুঙ্গী পরানো হতো, ধর্মের বিনাশ হতো যদি সুপ্রীম কোর্টে ভাস্কর্য বসানো হতো, জন দরদি রাজনীতি হতো যদি ফুটপাতের চাঁদাবাজির উৎস বন্ধ করে দেয়া হতো, চিহ চিহ রব উঠতো যদি শিক্ষক কোন বিত্তশালীর জামাই হতো।
ইবতেদায়ীর শিক্ষক মারা গেল অনশন করতে করতে, প্রাইমারীর শিক্ষকরা লাঞ্চিত হলো দিনের পর দিন।অথচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত বুদ্ধিজীবী শিক্ষকরা এর একটা প্রতিবাদ করলো না?
তবে কি এখানেও শ্রেণী বৈষম্য বিরাট আকারে ধরা দিল? যে শিক্ষকরা ক্লাশে শ্রেণী বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলতে নিজেকে অতি মানবতাবাদী বলে বুঝাতো তারাও কিন্তু একটা বিবৃতও দেয়নি। গরীব, দুঃখী, মেহনতি মানুষের জনপ্রতিনিধিরা যারা নাকি গরীবের বন্ধু তারাও কোন শব্দ করলো না।
একজন শিক্ষকের কান ধরানোর পর যখন আমরা কান ধরে উঠ-বস করি তখন একজন নিরীহ শিক্ষকের মৃত্যুতে আমরা একটা মানববন্ধণও করলাম না।মানবতাতো ঐটা যেটা পৃথীবির এক প্রান্তে আঘাত প্রাপ্ত হলে পুরো মানবতার গায়ে আঘাত লাগে।
শিক্ষক যদি জাতির মেরুদনন্ড নির্মাণকারী হন তবে একজন শিক্ষকের মৃত্যুতে পুরো জাতি কি মরে গেল ? একজন শিক্ষকের মৃত্যুতে পুরো শিক্ষক জাতির কি কান্না করা উচিত ছিল না ?
ছাত্র ইউনিয়ন, সিপিডি, জাসদ, বাসদ, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, জঙ্গী, নব্য জেএমবি, কারো চেতনায় অাঘাত লাগলো না? কারো ধর্ম বিনাশ হলেনা?
স্বজন হারানোর ব্যাথায় কারো চোখ দিয়ে মায়া কান্নার পানি অাসলো না।অবশ্যই বেচারা শিক্ষক মরে গিয়ে অন্তত পত্রিকার নিউজ তো হতে পেরেছেন, তবে কেন এবং কিসের ভিত্তিতে চেতনার ডুগডুগি বাজান কানের কাছে? কার কল্যাণে এই ধর্মের অাবির্ভাব যদি নিরীহ মানুষের পাশে ধার্মিকরা না দাড়ায়? কোথায় হেফাজত, জামাত, তাবলীগ অার বাম বাবুরা?
ধর্মতো হলো সেটা যেটা প্রতিটি মানুষের ব্যথায় কুঁকড়ে উঠে।তবে কিসের ভিত্তিতে, কোন চেতনায় এ দেশ এগুবে, যদি বেতনের দাবিতে একজন শিক্ষকের মৃত্যুতে দেশের কোন স্তরে কোন আফসোস অনুভূত না হয় ?
লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ইমেইল: himelsw10@gmail.com