মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে জেলা বিভিন্ন উপজেলায় লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতা তীব্র বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে এ দুই উপজেলার ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। দিনে ১৬-১৭ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুত সমিতি সোনাপুর (সদর-সুবর্ণচর) কার্যালয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সদর ও সুবর্ণচর উপজেলায় বাণিজ্যিক ও আবাসিক মিলিয়ে মোট ৪০ হাজার গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে সুবর্ণচরে ১২ হাজার ৫০০ ও সদর উপজেলায় ২৭ হাজার ৫০০ গ্রাহক। দুই উপজেলায় দিনে ১০ ও রাতে ১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। কিন’ সরবরাহ প্রায় এক তৃৃতীয়াংশ।
সূত্র জানায়, এ দুই উপজেলার বিদ্যুত সরবরাহের প্রধান লাইন সর্বোচ্চ ১৫ মেগাওয়াট লোড সহনীয়। অথচ এখানে প্রয়োজন ২৫ মেগাওয়াট লোডের তার। বিভিন্ন স’ানে বিদ্যুত সরবরাহের প্রধান লাইন আধুনিকায়ন করা হলেও এ অঞ্চলে ৩৫ বছরের পুরনো ৩৩ কেবি ব্যবহার হচ্ছে। তার ওপর এ লাইন বাংলাদেশ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ড, নোয়াখালীও (পিডিবি বা ওয়াপদা) ব্যবহার করছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, চৈত্রের শুরু থেকেই নোয়াখালীতে ব্যাপক লোডশেডিং শুরু হয়েছে। গ্রীষ্মের তাপদাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিংও বাড়তে থাকে। জ্যৈষ্ঠের শুরু থেকে লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে এইচএসসি পরীক্ষা চলায় শিক্ষার্থীরা দারুণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা সৈকত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার্থী তিশা দাস বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে দিনরাত অসহনীয় কষ্ট ভোগ করতে হয়। লেখাপড়ায় চরম ব্যাঘাত ঘটে। একবার বিদ্যুত এলে সর্বোচ্চ ১০-১৫ মিনিট স্থায়ী হয়।
সদর উপজেলার চর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী আবুল খায়ের বলেন, গত শুক্রবার তার দোকানের ফ্রিজে থাকা প্রায় ২০ হাজার টাকার আইসক্রিম নষ্ট হয়েছে।
বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করলেন নোয়াখালী পল্লী বিদ্যত সমিতির মহাব্যবস্থাপক শংকর লাল দত্ত। তিনি বলেন, জেলায় ৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে। কিন্তু অর্ধেকও সরবরাহ নেই। কেন্দ্র থেকে সরবরাহ না থাকলে কোনোভাবেই বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করা সম্ভব নয়।