বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ-বামাসপস্টাফ রিপোর্টার :: বাংলাদেশে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফ, উখিয়া, শাহপরী দ্বীপ প্রভৃতি এলাকায় জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গার আগমনের ফলে এসব অঞ্চলে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে স্থানীয়রা যেমনি উৎকন্ঠায় মধ্যে রয়েছে তেমনিভাবে প্রানবাঁচাতে আশ্রয়ের জন্য আগত রোহিঙ্গারাও মানবেতর জীবন যাপন করছে। মানবিক বিবেচনায় এসকল সহায়-সম্বলহীন অসহায় মানুষগুলোকে সাময়িক আশ্রয় দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করে সরকার যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে তা বিশ্ব দরবারে প্রশংসার দাবী রাখে। এখন এসকল রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে।

আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ-বামাসপ এর প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল অধিকারী যৌথ এক বিবৃতিতে এ আহবান জানান।

বিবৃতিতে জানানো হয়, রোহিঙ্গারা খাদ্য, বস্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য সমস্যায় করুন পরিস্থিতির মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। সরকারী-বেসরকারীভাবে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষিপ্তভাবে মানবিক সহায়তার হাত না বাড়িয়ে জেলা পর্যায়ে একটি নির্দিষ্ট এান ও তহবিল সেন্টার চালু করা হলে সেখানে সবাই যে যারমত ত্রান রেখে গেলে সেগুলো পরিকল্পনা মাফিক দূর্গতদের মাঝে বিতরন করা সম্ভব। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারে।

শিশু, নারী ও বয়স্ক লোকদের দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সৃষ্টি করতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ না করে সহনশীলতার সঙ্গে এইসব মানুষের দুঃখ-কষ্টের কথা বিবেচনা করে স্থানীয়দেরকে পাশে থাকতে হবে।

বামাসপ মনে করছে, রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিক হিসেবে অস্বীকার করার মিয়ারমারের কোন অধিকার নেই। তাদেরকে মিয়ানমার সরকারকেই নিরাপত্তা দিতে হবে। যাতে নিজেদের দেশে তারা নিরাপদে বসবাস করতে পারে। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে অবিলম্বে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে রাজি করাতে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের চাপ বড়াতে হবে।

নোবেল পুরষ্কার জয়ী অং সান সুচির ভূমিকা মানবতা ও বিশ্ব শান্তির বিরোধী। তাঁর আচরণকে মনকষ্টের সাথে ধিক্কার জানায় বামাসপ। রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যে অসামরিকীকরন করে নিরাপদ আকাশ ও ভূমি এর ব্যবস্থা করে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তাদের নিজ ভূমিতে নিরাপদে সম্মান ও অধিকারের সঙ্গে বসবাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

মানবিক কারণে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের যথাসম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি কুটনৈতিক পর্যায়ে চাপ বৃদ্ধিসহ এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য জাতিসংঘসহ বিশ্ব মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জোড়ালো ভূমিকা রাখা জন্য বামাসপ জোড়ালো ভাবে আহবান জানাচ্ছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here