ডা. ইসরাত শর্মী :: ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এক গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা স্বাস্থ্যের জন্য নানান উপকার বয়ে আনে। যেমন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়, বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটিকে মন্থর করে দেয়। রোজা একটি কার্যকর ডিটোক্সিফিকেশন থেরাপি, যার ফলে শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থগুলো বিশ্লেষিত হয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে।
রোজা সিগারেট এবং মদের মতো অনেক ধরনের আসক্তি থেকেও মুক্তি দিতে পারে। এ বিষয়ে কোনো মতভেদ নেই যে রোজা একজন সুস্থ মানুষের স্বাস্থ্যের আরও উন্নতি ঘটায়। কিন্তু যারা অসুখ-বিসুখে ভুগছেন তাদেরও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখা উচিত।
মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়ায়
রোজা মস্তিষ্কের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধিক খাদ্য গ্রহণে শরীরের ওপর যেমন চাপ বৃদ্ধি পায়, তেমনি এই চাপ মস্তিষ্কের ওপরও পড়ে। এজন্যই বলা হয়, ক্ষুধার্ত উদর জ্ঞানের আধার।
পেটের পীড়া কমায়
মানুষের পেটই হল সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু। বছরে ন্যূনতম একবার পেটের নিষ্কাশন প্রয়োজন। সারা মাস সিয়াম পালন করলে উত্তমরূপে পেটের দূষিত ক্ষতিকর পদার্থের নিষ্কাশন ঘটে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য ভোজনবিলাসী এবং অতিমাত্রায় খাদকদের জন্য রোজা আশীর্বাদস্বরূপ।
কোষ্ঠকাঠিন্যের উপকার
অনেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। রোজায় এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হয়ে যায়। রমজানে শরবত, পানীয় ও তরল খাদ্যের পরিমাণ বেড়ে যায়। বুট-ছোলা বর্তমানে ইফতারের প্রধান মেন্যু। তরল খাদ্য কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য যেমন উপকারী, তেমন বুট-ছোলাও। কারণ বুটে রয়েছে প্রচুর শর্করা, আমিষ ভিটামিন। এসব কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
লিভার ও কিডনির উপকারে
কিডনির মাধ্যমে শরীরে প্রতি মিনিটে এক-তিন লিটার রক্ত সঞ্চালিত হয়। খারাপ পদার্থগুলো মূত্রথলিতে প্রেরণ করে। সাধারণত সারা বছর এগুলো ন্যূনতম বিশ্রামের সুযোগও পায় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রোজা এমন একটি মাধ্যম, যা মানবদেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সামঞ্জস্য রক্ষাসহ সব ধরনের রোগ প্রতিরোধে সক্ষম। কারণ পুরো এক মাস রোজা রাখায় ওই সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দৈনিক প্রায় পাঁচ-ছয় ঘণ্টা বিশ্রামের সুযোগ পায়। ফলে পরবর্তী সময়ে এগুলো আরও শক্তি নিয়ে মানবদেহে কাজ করতে পারে।
