রিমতির শেষ যাত্রায় হাজারো মানুষের ভীড়মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি :: “আবার যদি আসি ফিরে, তোমাদের এই ভিড়ে। চিনে নিবে কি আমায়? অমাবস্যার তিথিতে নয়, অন্য কোনো শুভ্র সময় ভুলে যাবে কি আমায়? ” ২৩ শব্দের এই ছোট্র “উপলব্দি”র জন্যই হয়তো কাঁদছে সবাই। হাজারো মানুষের  স্রোতে মেধাবী কলেজ ছাত্রী রিমতির ঘরে। ঘরের কোনে কোনে, পড়ার টেবিলে প্রিয়জনরা খুঁজে ফিরছে রিমতির শেষ স্মৃতিগুলো। বাবা-মায়ের স্নেহ ভালবাসায় যে ঘরটি এতোদিন মায়াবী হাসি ও স্বপ্নের স্বর্গোদ্যান হয়ে উঠেছিলো সেই ঘরটিতে এখন কবরের নিস্তব্দতা। কাঁদতে কাঁদতে
সবার চোখ যেন পাথর হয়ে গেছে।

কলাপাড়া পৌর শহরের এতিমাখানা সড়কের উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামুরুজ্জামান মাসুম ও ঢাকা সিটি কলেজের বানিজ্য বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সানজিদা জামান রিমতি।

গত সোমবার (৯ জুলাই) সকালে ঢাকার সরোওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় জানাযা শেষে এতিমখানা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

সাদা কাফনে মোড়ানো রিমতির নিথর দেহটি যখন মাটির বিছানায় শায়িত করা হলো তখন নিরব, নিস্তব্দ সেই পাথুরে চোখগুলো থেকে অঝোর ধারায় ঝরে পড়ছে অশ্রুর স্রোত। প্রিয় সন্তান ও সহপাঠীর শেষযাত্রায় মঙ্গলবার সকালে হাজারো মানুষের বুকফাটা কান্না ও আর্তনাদে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো গোটা কলাপাড়া পৌরশহর জুড়ে।

সোমবার বিকালে রিমতির মৃত্যুর সংবাদ কলাপাড়ায় এসে পৌছলে গোটা পৌরশহর জুড়ে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিমতির স্মৃতি ও তাদের প্রিয় সময়গুলো তুলে ধরে সহপাঠী বন্ধু, শিক্ষকরা বিভিন্ন অবেগময় স্টাটাস দেয়। সবার একটি প্রশ্ন ফুল ফোঁটার অগেই কেন ঝড়ে পড়লো । রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও রাজনৈতিক পতাকা তলে কখনও আশ্রয় না নিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজ উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করার যার স্বপ্ন ছিলো।

কিন্তু হঠাৎ এক দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে মঙ্গলবার শেষ বিদায় নেয় সবার কাছ থেকে। তার লিখে যাওয়া-তোমাদের মাঝে অনন্তকাল বাঁচতে চাই বলেই কি এই জীবন মৃত্যুর বিভেদ ? এ কথাটি এখন কাঁদাচ্ছে সবাইকে।

রিমতির পরিবার, সহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে থ্যালাসিমিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলো।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here