রাস্তার দুই পাশে আবর্জনার স্তুপ: ভোগান্তিতে ফরিদগঞ্জের মানুষআশ্রাফ আলী :: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বাজারের প্রবেশ মুখেই রাস্তার দুই পাশে আবর্জনার বিশাল স্তুপ। আবার স্থানীয় কসাইরা প্রতিদিন গরু জবাই করে এখানেই ফেলে রাখে যাবতীয় উচ্ছিষ্ট। ফলে দুর্গন্ধের মাত্রা বাড়ছে কয়েকগুণ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সংলগ্ন কেরোয়া থেকে ফরিদগঞ্জ বাজারের প্রবেশমুখের এমন করুন দৃশ্য। দীর্ঘদিন ধরে নোংরা পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকায় পানি ও বায়ু দুষিত হয়ে রোগ জীবানু ছড়াচ্ছে এখান থেকে। নানামূখী ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী, মুসল্লি, হাটগামী ও ব্যাবসায়ীসহ অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের। রাস্তার দু পাশের ময়লা স্তুপের ৩০-৪০ মিটারের মধ্যেই ব্যাংক, মসজীদ ও খাওয়ার হোটেলসহ শতাধীক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বহু চেষ্টা তদবীরে কোন ফল না পাওয়ায় বিষাক্ত পরিবেশেই কাজ করতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।

বাজারের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ডাকাতিয়া খাল। বাজারের প্রবেশ পথে ফরিদগঞ্জ-চাঁন্দ্রা রোর্ডে খালের উপরে ব্রীজের পঞ্চিম অংশে রাস্তার দুই পাশে আবর্জনার বিশ্বাল স্তুপ। বাজারের সকল বর্জ্য এখানে নিক্ষেপের ফলে খালের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ভরাট হয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অপরিকল্পতভাবে আবর্জনা ফেলার কারনে ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চরম জণদূর্ভোগ পড়তে হয় এ এলাকায় বাসিন্দাসহ পথচারীদের। শুকনো মৌসুমে খালে পানি কমে যাওয়ায় দুষিত হয়ে মাছ ও জীব বৈচিত্রের মারাত্মক ক্ষতি হয়। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। পথচারীদের নিঃশ্বাস বন্ধ করে যাতায়াত করা ছাড়া উপায় থাকে না।

এ রাস্তাদিয়ে ফরিদগঞ্জ মজিদীয়া (অনার্স) কামিল মাদ্রাসা, বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ, এ আর পাইলট স্কুল, মডেল স্কুল, কিন্ডারগার্টেন সহ প্রায় বিশটি শিক্ষালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী এই ময়লার স্তুপ ডিঙ্গিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

রাস্তার দুই পাশে আবর্জনার স্তুপ: ভোগান্তিতে ফরিদগঞ্জের মানুষএছাড়াও গাজীপুর, চাঁন্দ্রা, আনন্দ বাজার, চৌরাঙ্গি, আষ্টা, গল্লাক, কামতা, শোল্লা, মুন্সির হাট, শাহী বাজার, পাটোয়ারী বাজার, বালীথুবা বাজারের
সবধরনের মানুষের ফরিদগঞ্জ বাজারে যাতায়াতের একমাত্র পথ এই রাস্তাটি। আলিয়া মাদ্রাসার অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রায়হান জানান, ক্লাসে যাওয়া আসার পথে এই স্থানটিতে অসহনীয় গন্ধ। দুর্গন্ধে যেন কলিজা বেরীয়ে আসে। আমরা এর থেকে পরিত্রাণ চাই।

মডেল স্কুলের শিক্ষক মনির হোসেন জানান, বাজারের ব্যাবসায়ীরা মিলে চেষ্টার কমতি রাখেননি এই ময়লা স্তুপ সরাতে। আমরা উপকৃত হবো যদি দুষনমুক্ত শহর গঠনে এসব ময়লার স্তুপ দ্রুত অপসারনে পদক্ষেপ নেয়া হয়।

গেল বছরের শুরুর দিকে ব্রীজের পূর্বাংশের ব্যাবসায়ী ইব্রাহীম, রাসেল, আবুল হোসেন মেম্বার, গোপাল দাস ও মোঃ আলীর নেতৃত্বে তিন হাজারেরও বেশি গণ স্বাক্ষর নিয়ে তৎকালীন পৌর মেয়র মঞ্জিল হোসেনের কাছে গেলে তিনি বিভিন্ন আশার বাণী শোনালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাজারের ব্যাবসায়ী শাহীন উদ্দীন বলেন, এখানে কসাইরা গরু জাবেহ করে, পাকস্থলী এখানে ধৌত করে, গরুর রক্ত ময়লাস্তুপের উপর পড়ে দুর্গন্ধ বহু গুনে বৃদ্ধি পেয়ে পুরো এলাকায় অসহনীয় অবস্থা সৃষ্টি হয়।

বাজারের গুদারা ঘাটসহ অনেক গুলো অব্যবহৃত সরকারী জায়গা রয়েছে। যার মধ্যে পরিকল্পিত পৌর ডাস্টবিন নির্মান করা গেলে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে স্থায়ী হওয়া সমস্যা থেকে পৌরবাসী নিস্তার পেতে পারে বলে স্থানীয়রা জানায়।

 

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here