তুরস্কে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত খুনের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। রুশ রাষ্ট্রদূত হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে। তবে রাষ্ট্রদূত অ্যান্দ্রে কারলভ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তুরস্কের নাগরিক ও প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বিরোধী নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। আঙ্কারায় রাষ্ট্রদূত হত্যাকাণ্ডে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনার পর যুক্তরাষ্ট্র তা অস্বীকার করেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কিরবি নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটি একটি হাস্যকর দাবি, একেবারে মিথ্যা, এতে সত্যের কোনো ভিত্তি নেই।’

আঙ্কারায় রাষ্ট্রদূত কারলভ হত্যাকাণ্ডের কিছুক্ষণ পর তুরস্কের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি এক কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। জন কিরবি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে এমন দাবি পুরোপুরি হাস্যকর।

তুরস্কের সংবাদপত্র ডেইলি সাবাহ এক প্রতিবেদনে বলেছে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলভূত কাভুসোগলু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এ সময় কাভুসোগলু কেরিকে বলেন, তুরস্ক এবং রাশিয়া এটা জানে যে, রাষ্ট্রদূত কারলভ হত্যাকাণ্ডে ফেতুল্লাহ গুলেনপন্থী সন্ত্রাসীরা জড়িত।

৭৪ বছর বয়সী তুরস্কের নাগরিক, ধর্মীয় নেতা এক সময় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পর বিরোধিতা শুরু করেন। গত জুলাইয়ে দেশটিতে এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। ওই সেনা অভ্যুত্থানেও গুলেন ও তার সমর্থকরা জড়িত বলে অভিযোগ করে এরদোয়ান।

গতকালের হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন, সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কিরবি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে গুলেন থাকার কারণে এ অভিযোগ আনা হচ্ছে। শিগগিরই কেরি এবং কাভুসোগলুর ফোনালাপ প্রকাশ করা হবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এ মুখপাত্র জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার অাঙ্কারায় একটি ছবি প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময় হামলার শিকার হন। মেলভুত আলতিনতাস নামের এক তুরস্কের দাঙ্গা পুলিশের এক সদস্য বন্দুক হামলা চালান। ডিউটিতে না থাকলেও ওই অনুষ্ঠানে নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশ করেন। পেছনে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর রাষ্ট্রদূতকে লক্ষ্য করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করতে করতে গুলি চালান তিনি। পরে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাষ্ট্রদূত কারলভ।

সূত্র : আরটি, রয়টার্স।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here