রাজশাহীতে জঙ্গিদের আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত ৬স্টাফ রিপোর্টার :: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জঙ্গি আস্তানায় গোলাগুলি ও ‘আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে’ ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শকসহ তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুই শিশুকে পুলিশ উদ্ধার করেছে।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত একটা থেকে জঙ্গি সন্দেহে হাবাসপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতরা হলেন— বাড়ির মালিক সাজ্জাদ হোসেন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মী আবদুল মতিন। বাকি জঙ্গিদের নাম ঠিকানা জানা যায়নি।
গোদাগাড়ী থানার ওসি হিপজুর আলম মুন্সি জানান, বাড়ির ভিতরে তিন-চার জন জঙ্গি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সকাল পৌনে আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের ডেকে ওই বাড়িতে জঙ্গিদের সম্ভাব্য বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে পানি ছেটানো শুরু করা হয়। এ সময় ওই বাড়িতে থাকা জঙ্গিরা অতর্কিত হামলা চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। এতে তিন জঙ্গি নিহত হয়। তবে বিলের মধ্যে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে একজন নারী জমির আইলে বসে থাকতে দেখা যায়। এ নিয়ে এলাকায় চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
তিনি আরো জানান, বুধবার রাত একটার দিকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মোয়াজ্জেম হোসেনের উপস্থিতিতে উপজেলার উপজেলার হাবাসপুরের ওই বাড়িতে জঙ্গি বিরোধী অভিযান শুরু করতে যায় পুলিশ।
তবে মাটির ওই বাড়ির ভিতরে কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভিতরে কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এরপর থেকে পুলিশ নিরাপদ দূরুত্বে থেকে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিতে থাকে। তবে রাতের কারণে অভিযান চালাতে পারেনি পুলিশ। সকাল সাতটার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে। একপর্যায়ে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি দল। তারা গিয়ে বাড়িটিতে দূর থেকে পানি ছিটিয়ে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছিলেন।
কিন্তু তিন জঙ্গি বাড়ির ভিতর থেকে বের হয়ে তাদের ওপর অতির্কিত আত্মঘাতী বোমা এবং বল্লম দিয়ে হামলা করে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। এতে তিন জঙ্গিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে বোমায় এবং বল্লমের আঘাতে এসআই উত্পল, কনস্টেবল তাজুল ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মী আব্দুল মতিন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে জঙ্গি আস্তানা এলাকার বাইরে এসে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মাসুদুর রহমান ভুঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ শাখার বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে এসেছে। তখন রাত নেমে গেছে। কৌশলগত কারণেই ‘সান ডেভিল’ স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার সূর্যোদয়ের পর এই অভিযান আবারও শুরু হবে।

তবে এখনো ওই আস্তানা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বলবৎ রয়েছে ১৪৪ ধারা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here