স্টাফ রিপোর্টার :: বছর ঘুরে আবার এসেছে সিয়াম সাধনার মাস। অনেকেই রমজানে কী খাবেন বা খাবেন না তা নিয়ে মুশকিলে পড়েন। মনে রাখতে হবে রোজার মাস সংযমের মাস। তাই খাওয়া থেকে শুরু করে ব্যায়াম, জীবনযাত্রা সবই হতে হবে নিয়ম মতো। এ সময় শরীরের কথা খেয়াল রেখে খাওয়া পরিমিত পরিমাণে করতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য যাতে ভেঙে না পড়ে তার জন্য খেতে হবে স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর ও সুষম খাবার।
জেনে নিন রমজানে সুষম খাদ্যের তালিকা।
ইফতার
রোজা রাখার ফলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। সেজন্য ইফতার শুরু করতে হবে সহজে হজমযোগ্য শর্করা খাবার দিয়ে। তাছাড়া পরিপাকতন্ত্রকে তার কাজের জন্য প্রস্তুত করতে খেতে হবে হালকা গরম তরল খাবার।
ইফতারকে দুই ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। প্রথম ভাগ মাগরিবের নামাজের আগে আর দ্বিতীয় ভাগ নামাজের পর। এতে ১সঙ্গে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ইফতারে যা খাওয়া ভালো-
খেজুর (৩- ৪ টা), ভেজিটেবল বা চিকেন স্যুপ (১ বাটি), ছোলা সিদ্ধ (১/২ বাটি), ফলের জুস (১ গ্লাস)। নামাজের পর পায়েস/দই চিড়া (১ বাটি), কলা অথবা আপেল (১ টা)।
রাতের খাবার
রমজানে রাতের খাবার হতে হবে হালকা। তাই ১ কাপ ভাত/ পাতলা ২টি রুটি, ১ টুকরো মাছ অথবা মুরগী, ১ কাপ সবজি ও ১ বাটি সালাদ।
সেহেরি
রমজানে সেহেরি হচ্ছে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। সারাদিনের ক্ষুধা ও কাঙ্খিত পুষ্টি সেহেরির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তাই সেহরিতে খাবার নির্বাচনে খেয়াল রাখতে হবে।
- সেহরিতে এমন কিছু খাওয়া ঠিক না যা খেলে বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকে সেহেরিতে দুধ কলা খেতে পছন্দ করেন। এতে বদহজম বা ঢেকুর ওঠার সম্ভাবনা থাকে। তাই সেহেরিতে এ জাতীয় খাবার পরিহার করাই ভালো।
- খুব বেশি পরিমাণে খাবার না খেয়ে রুচি অনুসারে স্বাভাবিক খাবার খাবেন। সারাদিন খেতে পারবেন না বলে ইচ্ছামত উদরপূর্তি করে খাবেন না। পেটের এক-চতুর্থাংশ খালি রাখবেন। একজন মানুষের সারাদিন যে পরিমাণ পানি দরকার হয় সে পরিমাণ রাতে পান করা উচিত।
- সেহরিতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন লাল আটা, বাদাম, বিনস, শস্য, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে। এগুলো হজম হয় আস্তে আস্তে, তাই অনেক সময় পর ক্ষুধা লাগে। রক্তেও চিনির পরিমাণ তাড়াতাড়ি বাড়ে না।
- সেহরিতে খেজুর বা খোরমা অবশ্যই খাবেন। এতে আছে শর্করা, চিনি, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার, সালফার, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন, ক্লোরিন ফাইবার, যা সারাদিন রোজা রাখার পর খুবই দরকারি।
- সেহরিতে তাজা ফলের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে সবজি খান। তা না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলো আপনার নিঃশ্বাসকেও সতেজ রাখতে সাহায্য করবে।
- রোজার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ না করলে এর অভাবে শরীরে কিটোন উৎপন্ন হবে। তাই এ সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খান যেমন কলা, ওটস, রুটি ইত্যাদি।
- সেহরিতে দুধের সঙ্গে ইসবগুল খেতে পারেন।এতে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- সেহেরিতে সহজপাচ্য বা ঠাণ্ডা খাবার যেমন দই, চিড়া খাবেন। তাহলে সারাদিন রোজা রাখা নাজুক পাকস্থলী শান্তিতে খাবার হজম করতে পারবে।
প্রতিদিন এইভাবে নিয়ম মেনে খেলে অস্বস্তিতে পড়তে হবে না, শরীর দুর্বলও লাগবে না। তবে শারীরিক সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করে নিবেন।