রংপুর সরকারী বেগম রোকেয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের ১০৩ ছাত্রীর রেজিষ্ট্রেশনের দাবিতে অচল ছাত্রী ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে। কলেজের তিনটি ভবনে বুধবার তালা লাগিয়ে দেয়ায় ডিগ্রী পাসকোর্স বার্ষিক পরীক্ষার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ছাত্রী ধর্মঘটের ৮ম দিনে শিক্ষকরা বুধবার সকাল ১০ টায় ডিগ্রী বার্ষিক পরীক্ষা নিতে গেলে তাতে বাঁধ সাধে ধর্মঘটি ছাত্রীরা। তারা হল রুম, একাডেমিক ও প্রশাসসনিক ভবনের কেচি গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে শিক্ষকদের চলে যেতে বলেন। এতে শিক্ষকদের সাথে তাদের বাক বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে শিক্ষকরা পরীক্ষা না নিয়েই চলে আসে। ফলে গত ৮ দিন থেকে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

কলেজ প্রশাসন জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের ২০১০-২০১১ শিক্ষা বর্ষে ভর্তি হওয়া ইংরেজি  প্রথম বর্ষের ১৪০ জন ছাত্রীর মধ্যে মাত্র ৩৭ জনের রেজিষ্ট্রেশন আসলেও ১০৩ জন ছাত্রীর রেজিষ্ট্রেশন এখনও আসেনি । ফলে ১০৩ জন ছাত্রী আসন্ন প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারবেনা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারনে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারী থেকে ছাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের ছাত্রীধর্মঘটসহ মানববন্ধ, অবরোধ, ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে আসলেও কোন সুারাহা হচ্ছে না। এ বিষয়ে কোন সুরাহা না হলে তারা আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছে।

ভুক্তভোগি ছাত্রীরা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজ কর্তৃপক্ষের কোন সুরাহার প্রস্তুতি না দেখায় ছাত্রীরা আন্দোলন মুখর হয়ে উঠে। তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে কলেজের মাস্টার্স অনার্স ও ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার্থীরাও ক্লাশ বর্জন করে মাঠে নামে। এ নিয়ে ছাত্রীরা ক্লাশ বর্জন করে গেলো এক সপ্তাহ থেকে মানববন্ধন অবরোধ, বিক্ষোভ ডিসি অফিস ঘেরাও ও স্মারকলিপি প্রদান করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শিক্ষা জীবনের এমন অনিশ্চতায় মঙ্গলবার ছাত্রীদের কান্নায় ক্যাম্পাসে হৃদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসময় নাসিমা বেগম মনি নামের একছাত্রী মুর্ছা গেলে তাকে হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। রেজিষ্ট্রেশন না হলে ছাত্রীরা আত্মহত্যা করার হুমকি দিয়েছে।

তবে তারা জানান, কলেজের অধ্যক্ষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর দায় চাপিয়ে কলেজকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

অধ্যক্ষ ড. আব্দুল লতিফ  ইউনাইটেড নিউজ-কে জানান, কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল হালিম ও ভর্তি কমিটির আহবায়ক নুরুল আলম গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। তারা বলেছেন যে কম্পিউটারে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে তাদের ইংরেজি বিভাগে ১১ মার্কস নেই। ৩, ৪ মার্কস আছে সেজন্যই তাদের রেজিষ্ট্রেশন হচ্ছে না। কলেজ অধ্যক্ষ আরও জানান, কলেজের প্রেরিত প্রতিনিধি দলের সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. মোবাশ্বেরা খানমের সাথে মঙ্গলবার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কলেজ প্রতিনিধি দল ছাত্রীদের শিক্ষা জীবন যেন নষ্ট না হয় সেদিকে গুরুত্ব আরোপ করেন। বৈঠক শেষে ছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে ডিনকে আহবায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত সমস্যা সমাধান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অধ্যক্ষও ছাত্রীদের যাতে এক বছর পিছিয়ে পড়তে না হয় সে জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহবান জানান।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/জহুরুল ইসলাম/রংপুর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here