ষ্টাফ রিপোর্টার :: গতবছর হলিউড টাউনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল ‘মি টু’। হলিউডের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশেও এই আন্দোলনের শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে সেসময় একেবারেই চুপ ছিল বলিউড।
অথচ বলিউডেও যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া অভিনেত্রীর সংখ্যা কম নয়। হলিউডে এ আন্দোলন শুরুর ঠিক বছরখানেক পরই যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছে বলিউড। শুরুটা হয়েছে অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত কর্তৃক অভিযোগ তোলার পর।
২০০৯ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ সিনেমার শুটিংসেটে প্রখ্যাত অভিনেতা নানা পাটেকারের হাতে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন তনুশ্রী—সস্প্রতি এই খবর প্রকাশের পর পুরো বলিউড জেগে উঠেছে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, ফারহান আখতার, পরিনীতি চোপড়া, স্বরা ভাস্কর, কঙ্গনা রানাওয়াত, রিচা চাড্ডা, টুইঙ্কেল খান্নাসহ অনেকেই এ নিয়ে কথা বলেছেন। নেটিজেনরা তনুশ্রী-নানা-বিবেক বিতর্ক নিয়ে সরব। অনেকেই বলছেন, ভারতে মি টু’র যাত্রা শুরু।
তবে ভারতে মি টু কখনোই হবে না দাবি করে তনুশ্রী বলেন, ‘ওই ঘটনার পর আমি মুষড়ে পড়েছিলাম। ছবির জগত্ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাই। কারণ আমি জানি, ভারতে মি টু আন্দোলন কখনো হবে না।’
এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়া অভিনেত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে সরব কঙ্গনা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এখানে বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে আসেনি। এটা আমার জায়গা নয়, উদ্দেশ্যও না।
তার সঙ্গে (তনুশ্রী) যা ঘটেছে, সেই কথিত হয়রানি প্রসঙ্গে কথা বলায় আমি তার তারিফ করছি। একই রকম পরিস্থিতির বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করা, এটা তার এবং অভিযুক্তর মৌলিক অধিকার। এ ধরনের কথাবার্তা খুবই স্বাস্থ্যকর এবং এগুলোই সচেতনতা বৃদ্ধি করবে।’
অভিনেতাদের মধ্যে আমির খানও এগিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনোকিছুর পুরো সত্যটা না জেনে মন্তব্য করা ঠিক না। মনে করি, এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে পারি না। আমার দিক থেকে বলবো, বলা ঠিক নয়।
কিন্তু এটা বলতে পারি, যখন এমনকিছু ঘটে তখন তা সত্যিই দুঃখের। এখন যখন ঘটেছেই তখন তদন্ত হওয়া দরকার। আমি মনে করি না আমরা এ নিয়ে মন্তব্য করতে পারি।’
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও পরিনীতি চোপড়াও মনে করছেন, বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হওয়া দরকার। যারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন এবং মুখ খুলেছেন তাদের পক্ষে থাকা ও শ্রদ্ধা করতে আহ্বান জানিয়েছেন এ তারকারা।
যখন ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই তনুশ্রী দত্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সংহতি প্রকাশ করেছেন তখন হর্ন ওকে প্লিজ ছবির সহকারি নির্মাতা শাইনি শেঠি, নানা পাটেকার, কোরিওগ্রাফার গণেশ আর্চায্য, প্রযোজক সামি সিদ্দিকী ও নির্মাতা রাকেশ সারাং তনুশ্রী দত্তের তোলা ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তনুশ্রী দত্তকে গত সোমবার আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন নানা পাটেকার। তার আইনজীবী রাজেন্দ্র শিরোধকর জানিয়েছেন, নানা পাটেকারকে নিয়ে গত কয়েকদিন তনুশ্রী দত্ত যত অভিযোগ করেছেন, সবই মিথ্যা।
নোটিশে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। যেহেতু তনুশ্রী দত্ত মিথ্যা অভিযোগ করে নানা পাটেকারের ইমেজের ক্ষতি করেছেন, এজন্য তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। তবে তনুশ্রী জানিয়েছেন, তিনি হাতে পাননি কোনো নোটিশ!
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here