মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার মূল কারণ আওয়ামী লীগের দু্‌ই প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া।

এক জনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিধি মোতাবেক তৃনমূলের নের্তৃবৃন্দ আর অপরজনকে মনোনয়ন দেয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কতিপয় ব্যক্তি।

মনোনয়নপত্র দাখিলের পর হতে এ নিয়েই চলছিল অনবরত সহিংসতা। এক প্রার্থীর লোকজন অপর প্রার্থীর প্রচারনায় বাধা ও হামলা ঘটনায় সাধারণ ভোটাররাও আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় থাকে

মনোনয়োন পত্র দাখিলের আগে গজারিয়া আওয়ামী লীগ তৃনমূলের সভা করে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলামকে মনোনয়োন দেয়।

কিন্তু তা মেনে নিতে পারেননি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেফায়েতউল্লাহ খান তোতা। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও স্থানীয় সাংসদ এ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাসের আশির্বাদ নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হন এবং কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে পরিগনিত হয়। পরবর্তীতে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে আমিরুল ইসলামকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে নিশ্চিত করেও নানা রকমের দিধা দ্বন্দ্ব কাজ করে। তাই সহিংসতা থামে না।

নির্বাচনের আগের দিন শনিবার দুপুরে রসুলপুরে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সন্ত্রাসীদের হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ ৩ প্রতিথজসা রাজনীতিক গুরুতর জখম হয়। গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান দেওয়ান(৬০), গজারিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচিত কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বীর প্রতীক (৬২) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জি এম মোস্তফাকে (৫০) ভোটের পরিবর্তেন এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের আরেক নিবেদিত প্রাণ বালুয়াকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন প্রধান (৫৫) ভোটের দিন নির্মমভাবে খুন হলেন দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীরই সন্ত্রাসীদের হাতে। এখানে যেন আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের কাটা। আত্মঘাতী ঘটনায় সব ল-ভন্ড।

এর আগে শুক্রবার নির্বাচনী প্রচারনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের এই দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনী সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পুত্রসহ ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়। এভাবে মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর হতে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। পার্শ্ববর্তী নারায়নগঞ্জের একটি বড় সন্ত্রাসী গ্রুপ বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থনে এসে এখানে পেশী শক্তি প্রয়োগ করে। নির্বাচনের দিন কেন্দ্রগুলো দখলে নিয়ে সীল মারতে মড়িয়া হয়ে উঠে উভয় প্রার্থীর লোকজন। এতে মোট ৯টি কেন্দ্রে স্থগিত হলেও অনিয়ম হয়েছে বেশ ক’টি কেন্দ্রে। বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় দলের সমর্থকরা।

মূলত আওয়ামী লীগের এই দু’ প্রার্থী থাকার কারণেই উত্তপ্ত ছিল গজারিয়া উপজেলা নির্বাচন। ধর্নাঢ্য এই দু’প্রার্থী অঢেল টাকাও বিলিয়েছে অকে অপরের বিরুদ্ধে। যার বলি হতে হয়েছে জনপ্রিয় বালুয়াকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান ছামছুদ্দিন প্রধানকে।

এব্যাপারে রেফায়েত উলস্নাহ খান তোতা তার বিরম্নদ্ধের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনিই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। তৃনমূল পর্যায়ের ভোটের সময় কাউন্সিলর নয় বলে তাকে বের করে দেয়া হয়। পরে কেন্দ্র থেকে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এই সংহিসতার জন্য তিনি আমিরুল ইসলাকেই (মটর সাইকেল) দায়ী করেন। অন্যদিকে আমিরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সিনিয়র নেতাদের ওপর যে নগ্ন হামলা তোতা চালিয়েছেন তা কোন মানুষের কাজ নয়। দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেয়ায় নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার পড়্গে কাজ করে কি অপরাধ করেছে? এই প্রশ্ন রাখেন তিনি। এই ঘটনার সামনে এবং পেছনে যারা জড়িত তাদের শাসিত্ম দাবী করেন তিনি।

এই উপজেলায় ৬ জন উপজেলা প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন প্রার্থীই আওয়ামী লীগের। রেফায়েতউলস্নাহ খান তোতা (দোয়াত কলম) প্রার্থী হওয়ায় পারিবারিক বিরোধের কারণে তাঁর আপন চাচাতো ভাই মন্সুর আহম্মেদ জিন্নাহ(টেলিফোন) প্রার্থী হয়েছেন। বাকী তিন জন প্রার্থীর মধ্যে দু’জন বিএনপির মো. মজিবুর রহমান, (আনারস) ও বিদ্রোহী আব্দুল মান্নান দেওয়ান মনা (ঘোড়া)এবং অপর জন জাতীয় পার্টির আলহাজ কলিমুল্লাহ (কাপ পিরিচ) ।

 

সুজন/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here