যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর লেখা 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব' নাটক যাচ্ছে পাঠ্যসূচিতেবাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে :: ঢাকার উত্তরাস্থ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্তভুক্ত হতে যাচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর  যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নাট্যকার খান শওকতের লেখা ঐতিহাসিক নাটক ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’।
গত বুধবার  ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. জাকারিয়া লিংকন প্রেরিত একটি পত্রে এ ঘোষনা পাবার পর আনন্দে উচ্ছাসিত হয়ে পড়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ নাটকের রচিয়তা খান শওকত।
খান শওকত বলেন, এতবড় আনন্দের খবর পেয়ে আমি প্রায় বাকরুদ্ধ। মনের ভাব প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমার দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদের ভাষা আমার জানা নেই, তবে তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক প্রবাসী নাট্যকার খান শওকত আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ নাটকটি পুস্তক আকারে প্রকাশ হয় ২০১৬ সালে।
এরপর বইটি বাংলাদেশ ও পশ্চিম-বঙ্গের বিভিন্ন বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠান তিনি। বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়রএ ব্যাপারে তাঁর সাথে প্রাথমিক আলোচনাও করেন।অবশেষে নিউ ইয়র্কে বেড়াতে আসেন ঢাকার উত্তরাস্থ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. জাকারিয়া লিংকন।চিত্রশিল্পী প্রবীর গুন জাকারিয়া লিংকনকে নিয়ে আসেন গাঙচিল এর সাহিত্য আসরে।
ঐদিন ড. জাকারিয়া লিংকন  সবার সামনেই বলেন জাতির জনকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন এবং একাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে রচিত ঐতিহাসিক নাটক- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ নাটকটি ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী সাহিত্য বিভাগে পাঠ্যসুচিতে অন্তর্ভূক্তি করা হবে।
লিংকন আরও বলেন, নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং বেঈমান মীর জাফরের ইতিহাস আমরা ভুলে যেতাম, যদি কিনা এ বিষয়ে কোন নাট্যগ্রন্থ রচিত না হতো। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি নাট্যগ্রন্থ সকল প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যগ্রন্থ থাকা উচিত। যেমন আছে  নীলদর্পন বা সিরাজউদ্দৌলা। দেশ স্বাধীনের পর ৪৭ বছর পার হয়েছে কিন্তু কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের একটি গ্রন্থকে পাঠ্য হিসেবে সিলেবাসে কেন যে আজও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এটা তাঁর বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গ্রন্থখানি আমরা পাঠ করেছি। মঞ্চে বা পর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার জন্য নাটকটি একটি উপোযুক্ত গ্রন্থ।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ গ্রন্থটিকে ইংরেজী সাহিত্য বিভাগে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে অন্তর্ভূক্তির জন্য সম্মত হয়েছেন এবং গ্রন্থখানিকে ইংরেজীতে অনুবাদের দায়িত্ব পালন করবেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য্য অধ্যাপক ড: জাকারিয়া লিংকন। অনুবাদ এর কাজ শেষ হলেই ইংরেজী বিভাগ এটার চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইংরেজীতে গ্রন্থখানা প্রকাশ করবেন। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাস থেকে পাঠ্যগ্রন্থ হিসেবে গ্রন্থখানিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হবে।
এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয় গুলোর কাছেও গ্রন্থটি তুলে ধরারও চেষ্টা করবেন কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সকল খরচ বহন করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইংরেজীতে গ্রন্থখানা প্রকাশের পর প্রতিবছর বিক্রিত বই থেকে ৪০% শতাংশ লাভ্যাংশের অর্থ লেখক পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়।
নাট্যব্যক্তিত্ব ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বঙ্গবন্ধু গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুনতাসীর মামুন এবং ২১ শে পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব জামালউদ্দীন হোসেন নাটকের বইটি প্রকাশকালে লেখা মুখবন্ধে উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন।
নিউ ইয়র্কে এ নাটকের ২টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব প্রদর্শনী উপভোগ করেছেন বাংলাদেশ সরকারের দুজন সাবেক মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতারা।
জানা গেছে, আগামী জাতীয় শোক দিবসে(১৫ই আগষ্ট) এ নাটকটি একযোগে বাংলাদেশ বেতারের সবকটি কেন্দ্রে প্রচারিত হবে। এছাড়াও আগামী বছরে কলকাতায় অনুষ্ঠিতব্য নাট্য সম্মেলনে শ্রীমতি মিথু দে’র পরিচালনায় এনাটকের প্রদর্শনী হবে। তারা পশ্চিম বঙ্গ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রও যোগাড় করেছেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন নাট্যগোষ্ঠি ইতিমধ্যেই এ নাটকের কাজ শুরু করেছেন।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here