বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণের চেষ্টা’ নামক নাটক সাজিয়ে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাচারকৃত ৩’শ মিলিয়ন ডলারের তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন সরকার। দলের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই নিউ ইয়র্কে রিজভির সংবাদ সম্মেলনে হামলা চালিয়েছেন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মিরা। গত সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্তোরায় এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মিরা এ অভিযোগ করেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা বাংলা প্রেস। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই লিখিত বক্তব্য দেন দলের সাবেক সাধারন সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু। তাঁর সাথে ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা ও বৈদেশিক দূত ডা. মজিবুর রহমান। জিল্লু বলেন, জয়ের ব্যাংকে অর্থ পাচারের খবর পেয়ে বাংলাদেশি আমেরিকান যুবক রিজভি আহমেদ সিজার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এফবিআই সদস্যের সহায়তায় অর্থ পাচার সংক্রান্ত নানা রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আইনের দৃষ্টিতে সেটা অগ্রহনযোগ্য। ভুল সিদ্ধান্ত ও নিয়ম বর্হিভূত পন্থা অবলম্বনের কারনে রিজভির কারাদন্ড ঘোষনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র জয়ের অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার একটি ব্যক্তিগত সংবাদ সম্মেলনকে পন্ড করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। জয়ের নির্দেশেই তাঁর অর্থ কেলেংকারী ধামা চাপা দিতেই এবং কোর্টের মূল লিখিত পেপার জন সম্মুখে প্রচার না করার জন্য এই আক্রমণ চালান আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মিরা। অথচ উক্ত মামলার রায়ে কোথাও সজিব ওয়াজেদ জয় ও তাঁর পরিবারের সদস্যকে অপহরনের চেষ্টার কোন কথা উল্লেখ ছিলনা। জিল্লু আরো বলেন, পদ্মা সেতুর প্রকল্পসহ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৩’শ মিলিয়ন ডলারের অর্থ পাচারের দেশ- বিদেশে সর্বজন বিদিত। দেশের সংবাদ মাধ্যমের কন্ঠরোধ করলেও প্রবাসের মিডিয়া ও সামাজিক গণমাধ্যমে জনগণের সম্পদ চুরির কাহিনী সাড়া বিশ্ব ও দেশের মানুষ অবগত হচ্ছেন। পাশাপাশি একজন ব্যক্তির উপর দলীয় আক্রমন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে জড়িয়ে অপ্রপ্রচার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের দেশীয় ফ্যাসিবাদী কায়দায় এই অভদ্রজনিত আচরনের তীব্র নিন্দা জানান যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি। আওয়ামীলীগে এ ধরনের কার্যকলাপ অব্যাহত রাখলে তাদেরকেও কোন ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা যখন প্রবাসে বসে স্বাধীনভাবে কথা বলছি তখন গোটা বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম স্বৈরতন্ত্রের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে গনতন্ত্রের সুর্যোদয়ের প্রতিক্ষায় সংগ্রামরত রয়েছে। স্বৈরাচার মসনদে টিকে থাকার নির্মম ও পৈশাচিক চেষ্টার ধারাবাহিকতায় ইলিয়াস আলী সহ সহস্রাধিক বিরোধী নেতা কর্মিদের গুম করা হয়েছে। গুম নাটকের সর্বশেষ শিকার হয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব জনাব সালাউদ্দিন আহমদ। আমরা আজকের সভা থেকে এর তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে সালাউদ্দিন আহমদকে তার পরিবারের নিকট অক্ষত অবস্থায় ফিরে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। নিপিড়ন, নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় আজ কথায় কথায় ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে আসছে অবৈধ সরকারের বিভিন্ন কর্তা ব্যাক্তিরা। তার মধ্যে জাসদ নেতা ইনুর ধৃষ্টতা সীমাহীন হয়ে চলেছে। তাই আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ইনুকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হল। যুক্তরাষ্ট্রে এলে তাঁর যে কোন সভা সমাবেশ গণতন্ত্রকামী প্রবাসীরা প্রতিহত করবে। লিখিত বক্তব্যে জিল্লু উল্লেখ করেন সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে চারবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা রয়েছে। এমন একজন ব্যক্তি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পদের বিনিময়ে অর্থ পাচারের কেলেঙ্কারি থেকে অপাতত পার পেয়ে যাচ্ছেন। তবে সময়মত এর জবাবদীহিতা থেকে তিনি মুক্ত হতে পারবেন না। ভবিষ্যতে বিএনপি এর বিচার করবে। লিখিত বক্তব্য শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ডা. মজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান জিল্লু। সাম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি দলীয় খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ায় তাঁদেরকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা কর্মিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা.মজিবুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, মাহমুদ চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন, গিয়াস মজুমদার, আব্দুস সবুর, আনোয়ারুল হক, ফারুক চৌধুরী, রেজওয়ানুল হক, আবুল হাশেম শাহাদৎ, শামসুল ইসলাম মজনু, এমলাক হোসেন ফয়সল, ছায়েদুল হক, গিয়াস উদ্দিন, নিয়াজ আহমেদ মজনু, মহিবুর রহমান সওদাগর, এবাদ চৌধুরী, ফেরদৌস আলম, মোশারফ হোসেন সবুজ, শামসুজ্জামান তারেক, আবু সাঈদ আহমদ, আব্দুর রহিম, সাইফুর খান হারুন, আহবাব হোসেন খোকন, আতিকুল হক আহাদ, জুবায়ের চৌধুরী শাহীন, সৈয়দ তৌফিক আহমদ, মেহবুব খান, আমানত হোসেন আমান, ফারুক মজুমদার, মাহফুজুর রহমান, সালেহ চৌধুরী, উত্তম বনিক, মেজবাউজ্জামান, রেজাউল আজাদ ভুঁইয়া, বোরহান উদ্দিন, শেখ হায়দার আলী, এম এ বাছিত, জাহুদ খান, শোয়েব চৌধুরী, শাহাদৎ হোসেন রাজু, আনোয়ারুল হক, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী রিংকু, জীবন শফি, অ্যাড. আব্দুল মালেক ও রোজী বেগম প্রমুখ।