স্টাফ রিপোর্টার :: যথাযোগ্য মর্যাদা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যদিয়ে সোমবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। কোথায়ও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান। জাতীয় ঈদগাহে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুুল হামিদ, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিগণ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি ও সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকরা জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায় করেন।
এ ছাড়া প্রতি বছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহত্ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে বিশ্বের সকল মুসলমানদের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মঙ্গলকামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার বর্গের জন্য দোয়া করা হয়। জাতীয় ঈদগাহ ও শোলাকিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে হয়েছে পাঁচটি ঈদ জামাত। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতী মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী। দ্বিতীয় জামাতের ইমাম ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খান।
সকাল থেকে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করার জন্য মুসল্লিরা ভিড় করতে থাকেন। মুসল্লিরা ঈদগাহের বাইরেও নামাজে অংশ নেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা: জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয় ঈদুল ফিতরের জামাত। এতে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ, স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোঃ নাসিম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মোঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সেক্রেটারি নূর-ই-আলম চৌধুরী, স্পীকারের স্বামী সৈয়দ ইসতিয়াক হোসেন, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, হুইপবৃন্দ, জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সংসদ সদস্যবৃন্দ, জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব ড. মোঃ আবদুর রব হাওলাদার, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার জনগণ ঈদের জামাতে শরিক হন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি ও জাতীয় অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ৪০৮টি ঈদ জামাত: ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে মহানগরীর ৯৩টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ৪টি ও ৫টি করে মোট ৪০৮টি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র কার্যালয়ের কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় জানান, ডিএসসিসির ৫৭টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে ৪টি করে ২২৮টি স্থানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সমাজকল্যাণ অফিসার এনায়েত হোসেন জানান, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে ৫টি করে মোট ১৮০টি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।
রাজারবাগ: মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ মাঠে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করেন। আইজিপির সঙ্গে ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ সদস্যগণ এবং বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদের নামাজের পর দেশ ও জাতির অব্যাহত অগ্রযাত্রা, কল্যাণ ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে আইজিপি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য এবং মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম খতিব ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন এবং দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম খতিব হাফেজ নাজীর মাহমুদ। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মেইন গেইট সংলগ্ন মাঠ এবং শহীদুল্লাহ হল লনেও ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় ঈদগাহে নিরাপত্তা:মানুষের দেহ তল্লাশির পর শুধু জায়নামাজ সঙ্গে করে জাতীয় ঈদগাহে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। ঈদগাহ মাঠে নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ছিল।