সজল দেব, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজার জেলার পাম্পগুলোতে ডিজেল সংকট তীব্রআকার ধারন করেছে। এতে  বোরো মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা সেচ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজেল  না পেয়ে হতাশার মধ্যে রয়েছেন। ফলে বোরো ফষল আবাদ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চীয়তা। অপরদিকে পাম্প মালিক ও প্যাক পয়েন্টে ডিজেল বিক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী তেল না পেয়ে শ্রীমঙ্গলস’ বিভিন্ন কোম্পানির ডিপো সুপারেন্টেডদের উপর ক্ষুব্দ হন। এই সুযোগে বিভিন্ন প্যাক পয়েন্টে খোলা ডিজেল বিক্রেতারা সংকটের অজুহাতে বেশী দামে ডিজেল বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগি কৃষকরা। অন্যদিকে রাবার ড্যাম্পের কাজের জন্য পানি না পেয়ে কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী আফিসারের কার্যালয় সন্মেখে অবস’ান ধর্মঘট করেন। এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিলারদের অভিযোগে জানা যায়, বোরো মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক ডিজেল ডিপো থেকে না পেয়ে তারা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও কৃষকদের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি, হাইল হাওর ও কাইয়াদীঘি হাওর এলাকার অনেক কৃষকরা অভিযোগ করেন তারা বেশী দাম দিয়েও ডিজেল পাচ্ছেন না। তাই তারা বোরো ফসল আবাদ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারনে কৃষিখাতে বেশী সেচ লাগছে, শীতকালে স’ল পথের পরিমান বেড়ে যাওয়া ও চা বাগানে পানি সেচের প্রয়োজন পড়ায় ডিজেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি ডিজেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্টানগুলো বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে চাহিদা মতো ডিপোগুলোতে ডিজেল বিপনন করতে না পারায় সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে।

পাম্প মালিক ও ডিলারদের অভিযোগে আরো জানা যায়, গতবছর এই ইরিগেশন মৌসুমে তারা চাহিদা অনুযায়ী  ডিজেল উত্তোলন করে মানুষের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ বছর চাহিদার তুলনায়  অর্ধেক ডিজেল না পেয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন। মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার জন্য বরাদ্ধকৃত ডিজেল সিলেট নিয়ে যাওয়ায় কৃত্রিম এই সংকট সৃষ্টি করেছেন ডিপোর উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ। শীঘ্র এ সমস্যার সমাধান করা না হলে তা প্রকট আকার ধারন করতে পারে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পেট্টোল পাম্প মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাইফুল আলম জানান, এমনিতেই আমাদের চাহিদা বেশি তার উপর এই মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের জন্য বরাদ্দকৃত ডিজেল সিলেট নিয়ে যাওয়ায় সংকট আরো বেড়েছে।
শ্রীমঙ্গলস’ যমুনা ডিপোর ডিএমও মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, তেলের চাহিদা গতবছরের তুলনায় এ বছর অনেক গুন বেড়ে গেছে। শুধু মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ নয় পুরো সিলেট বিভাগেই চাহিদা বেড়েছে। তাই পরিশোধনাগার থেকে প্রয়োজনীয় ডিজেল বিপনন করতে পারছে না। একারনে সাময়িক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াগন বিলম্বে আসা ও রশিদপুর শোধনাগার থেকে প্রায় ৪০ভাগ ডিজেল কম আসাতে সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

রশিদপুর কনডেনসেট পরিশোধনাগার থেকে ডিজেল কম বিপনন করা হচ্ছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আরসিএফপি এর ডিজিএম প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, শীত মৌসুম আসার পর ডিজেলের চাহিদা বেড়ে গেছে। এতে পেট্টোলের রিজার্ভ বেড়ে যাওয়ায় মজুদপাত্রের অভাবে ডিজেল পরিশোধন করে রাখার স’ানের অভাব দেখা দিয়েছে। তাই চাহিদা মতো ডিজেল পরিশোধন করা যাচ্ছেনা। অপর দিকে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মতিগঞ্জে বিলাশ নদীর উপর রাবার ড্যাম্প স’াপন কাজের জন্য পানি নিতে না পারায় ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ শতাধিক কৃষক বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলা কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানান। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আশফাকুল হক চৌধুরী তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বাঁধ নির্মানের মাধ্যমে সাময়িক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here