ষ্টাফ রিপোর্টার ::  পয়সা খরচ ছাড়াই শুধুমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহার করে হাজার হাজার ডলার আয় করছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের কিছু তরুণ। তাদের এই আয়ের উৎস ‘এইচকিউ ট্রিভিয়া’ নামের একটি জনপ্রিয় মোবাইল অ্যাপলিকেশন।

যুক্তরাষ্ট্র মাতানোর পর চলতি বছরের শুরুতে অ্যাপটি ব্রিটেনে আসে। বিনা পয়সার এই অ্যাপটি মূলত ১৫ মিনিটের লাইভ স্ট্রিম কুইজ শো প্রচার করে থাকে। এতে অংশ নিয়েই ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন দুই ডলার থেকে শুরু করে হাজার হাজার ডলার পর্যন্ত আয়ের সুযোগ পান।

ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে এখন কুইজ শোটির দর্শক সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে লাখ থেকে কোটিতে। সম্প্রতি তারা এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় জ্যাকপট নিয়ে হাজির হয়। সেখানে ৮৩ জন বিজয়ীর মধ্যে তিন লাখ ডলার ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে তারা। মোবাইলের মাধ্যমে কুইজের মোট ১২টি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের ভিত্তিতে দেওয়া হয় মোটা অংকের এই অর্থ পুরস্কার।

শুধু তাই না, ওই জ্যাকপট শো-এর অতিথি উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন দ্য রক-খ্যাত জনপ্রিয় রেসলার ও অভিনেতা ডোয়েন জনসন। ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ভাইন-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা কলিন ক্রোল ও রুশ ইউসুপোভ এই অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করেন।

এ ব্যাপারে রুশ বলেন, ‘আমরা চাই সবাই যেন সেই গৎবাঁধা টেলিভিশন কুইজ থেকে বেরিয়ে এসে নতুন কিছুর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এ কারণে আমরা প্রতিটি অনুষ্ঠান এমনভাবে সাজাই যেন ব্যবহারকারীরা আমাদের সঙ্গে বেশি করে সম্পৃক্ত হতে পারে এবং তারা যেন প্রতিদিন আমাদের ভিজিট করতে আগ্রহ পায়।’

তবে প্রশ্ন ওঠে, যে অ্যাপলিকেশনটির নাম দুদিন আগেও কেউ জানতো না, সেটি কিভাবে রাতারাতি এতো বিপুল পরিমান অর্থ বিলিয়ে যাচ্ছে? এমনকি আলোচিত তারকাদেরও মঞ্চে আনছে কোনো বাড়তি বিজ্ঞাপন প্রচার না করেই!

এ ব্যাপারে অ্যাপটির ব্রিটিশ সংস্করণের উপস্থাপক শ্যারন কারপেন্টার জানান, লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ভিউয়ার হিট থেকেই তাদের এই আয় হয়।

শ্যারন কারপেন্টার বলেন, ‘সরাসরি সম্প্রচারিত বিষয়ের প্রতি ভিউয়ারদের আগ্রহ সবসময় বেশি থাকে। কারণ এখানে রাখ-ঢাকের কোনো  সুযোগ নেই। যেকোনো সময় যেকোন কিছু হতে পারে। সবাই জানতে চায় কুইজটার শেষ পর্যন্ত কি হয়। আর মোবাইলে ব্যবহার করায় মানুষ চলার পথেও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এভাবে এইচকিউ ট্রিভিয়া একদিন টেলিভিশন সম্প্রচারের জায়গা দখল করবে।’

তবে অ্যাপটি ঘিরে যে সমালোচনা হয়নি তা নয়। অনেকেই কুইজ জিততে না পেরে হ্যাশট্যাগ ডিলিট এইচকিউ নামের টুইটারে প্রচারণা চালিয়েছে। আবার অনেকেই এই কুইজের প্রতি তাদের আসক্তির কথা জানিয়েছে। তাদেরই একজন স্কট মেঙ্কে।

স্কট মেঙ্কে জানান, গত বছরের অক্টোবরে অ্যাপটি ডাউনলোডের পর থেকে এমন কোনো দিন নেই যে তিনি এতে ঢু মারেননি। এ পর্যন্ত তিনি ১২ হাজার ৩০০ ডলার আয় করার দাবি করেছেন। তার কাছে দিন দিন যেন নেশায় পরিণত হয়েছে এইচকিউ ট্রিভিয়া।

অর্থের পাশাপাশি বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কারও দিয়ে থাকে এইচকিউ ট্রিভিয়া।

জানা যায়, ভিউয়ার সংখ্যার পাশাপাশি এইচকিউ মূলত পরিচালিত হয় ফাউন্ডার্স ফান্ডের মতো বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থে এবং অ্যাপটির মাদার কোম্পানি ইন্টারমিডিয়া ল্যাবের লাভ্যাংশে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here