37_1ভারত বিরোধীতাই যাদের রাজনীতির হাতেখড়ি,তারাই এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আগাম শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন।এক সময যারা সীমান্ত ও মেত্রী চুক্তিকে গোলামী

চুক্তি আখ্যায়িত আওয়ামীলীগকে ভারতের দালাল বলে দিনরাত গালাগাল

দিয়ে মুখে ফেনা তুলেছিল,আজ তারাই স্থল সীমান্ত চুক্তি ভারতীয় সংসদে

অনুমোদনের পর সাধুবাদ জানাচ্ছে। হঠাৎ করে বিএনপি’র ভারতপ্রীতি তার সমর্থকদের মাঝে কিছুটা হলেও আলোড়ন তুলেছে। এতদিন পর বিএনপি ভারত মুখী হওয়ায় তার মিত্ররাও খুশী।তারপরও বিএনপি ওজামায়াত জোট আগ বাড়িয়ে নরেদ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে স্বাগত

জানিয়ে রাজনৈতিক বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন বলেই অভিজ্ঞমহলের ধারনা।সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হবার আগ পর্যন্ত প্রকাশ্যে কখনো ভারতের বিরোধীতা না করলেও তার মন্ত্রী পরিষদে স্বাধীনতা বিরোধীদের ঠাই দেয়ায় ভারত তা ভাল চোখে দেখেনি। পাকিস্থানপন্থী এসব নেতারা জিয়ার মন্ত্রী সভায় যোগ দিয়েই ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াতে থাকেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের অবদানকে খাটো করে দেখাতে গিয়ে মুলত: ভারত বিরোধীতায় জড়িয়ে পড়েন।তালপট্রি নিয়ে অযথা বিতর্ক তুলে(আজ যার অস্তিত্ব নেই) স্পষ্টতই ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।সেই ধারা থেকে বেগম জিয়া ওতার মিত্ররা আগুনে ঘি ঢেলে তা আরো উস্কে দিয়েছেন।৯১এ বেগম জিয়া প্রথম ক্ষমতায় এসে প্রকাশ্যে ভারত বিরোধীতা না করলেও তলে তলে ঠিকই ভারত বিদ্বেষীভাব উস্কে দিয়েছেন।ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তির কথা ভুলে যাবার কথা এখনো সবার মনে আছে। এরপর ৯৬এ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে বেগম জিয়া আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ভারতের দালাল বলে গালাগার শুরু করে। বিরোধীতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে দেশ দুটি শিবিরের ভাগ হয়ে যায়। ২০০১এ বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এমন উদ্ভট বক্তব্য দিয়েছেন,যা এখন টিভিতে শুনলে নিজেরাই লজ্জা পাবেন। শান্তি চুক্তি হলে ফেনীর পর থেকে ভারত হয়ে যাবে। অর্থাৎ নিজের ফেনীর আসনটি

ঠিক রেখে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে চট্রগামকে বাদ দিয়েছিলেন। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে আযানের পরিবর্তে উলুধ্বনি হবে, বাংলাদেশ ভারতের অঁঙ্গরাজ্য হবে ইত্যাকার বক্তব্যে স্বাধীনতাবিরোধীদের একত্রিত করে এমন বিদ্বেষ ছড়ানো হয়,তাতে মনে হয়েছিল আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশ সত্যি সত্যি ভারতের অঙ্গঁরাজ্য হবে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই এর পরামর্শে

ভারত বিরোধীতাই শুধু নয়, ভারতের উত্তর পুর্বাঞ্চলের ৭ রাজ্য যা সেভেন সিস্টার নামে পরিচিত সে অঞ্চলকে ভারত থেকে বিভক্ত করার জন্য হেন কোন কাজ নেই যার সমর্থন-সহায়তা নেই যা তারা করেননি।

২০০১ সনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে বিএনপি জামায়াত জোট সরকার গঠন করে এমন বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়,তাতে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে উঠে কংগেসের মনমোহনের ইউপিএ(জোট)সরকার। মনমোহন সরকারকে ব্যতিবস্ত রাখতে পুরো সীমান্ত জুড়ে ভারত বিরোধী বিদ্রোহীদের আশ্রয় প্রশ্রয়,ট্রেনিং এমনকি অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতে থাকে। জোট সরকারের

এমন সমর্থনে আইএস এ’র প্ররোচনায় উলফা’র জন্য ১০ট্রাক অস্ত্র এনে

ধরা খায় চট্রগ্রাম জেটিতে। কট্রর ডানপন্থি জামায়াত,পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএস আই ও বিএনপি জোটের এমন হীন কাজে ভারতের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় বিএনপি জোটের আসল চেহারা।দেশ বিদেশে এ নিয়ে

তুমুল নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এই নোংরা মুখোস উন্মোচনের পর ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি তলানীতে পৌঁছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখার্জী বাংলাদেশ সফরে এলে ঠুনকো অজুহাতে

বেগম জিয়া তার সাথে পুর্ব নির্দ্ধারিত সৌজন্য স্বাক্ষাৎ থেকে বিরত থাকেন।যার ফলাফল তিনি এখন হাতে হাতে টের পাচ্ছেন।

গত নির্বাচনে ভারতের হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি’র নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনে জিতলে বেগম জিয়া ও তারছেলে তারেক রহমান আগবাড়িয়ে অভিনন্দন জানান। এমনো খবর রটে বেগম জিয়ার দলের কতিপয় নেতা বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে দেখা করার জন্য দিল্লী ছুটে যান। কিন্তু ভারতের অভিজ্ঞ নেতৃত্ব সে সুযোগ দেননি। বিএনপি’র প্রত্যাশা ছিল কংগ্রেসের সাথে যেহেতু আওয়ামীলীগের সম্পর্ক,সেহেতু বিজেপি তাদের কোলে টেনে নিবে। দুর্ভাগ্য বিএনপি ও জামায়াত জোটের তাদের পাল উল্টো হাওয়া বইছে। আর সেজন্যই দক্ষিন এশিয়ার পরাক্রমশালী ভারতের প্রধানমন্ত্র্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে আগ বাড়িয়েই সাধুবাদ ওঅভিনন্দন জানিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।

রবীন্দ্র না্‌থ পাল, বার্তা সম্পাদক, দৈনিক আজকের বাংলাদেশ

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here