ষ্টাফ রিপোর্টার :: একেই বলে মি. ডিপেন্ডেবল। দলের মহাবিপদের মাঝেও যিনি ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিপক্ষকে সামলাতে পারেন, তিনিই সত্যিকারের যোদ্ধা। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের বোলিং দাপটে কম রানেই গুটিয়ে যাওয়ার শংকা জেগেছিল।

সেখানে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারসেরা ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলের স্কোর নিয়ে গেলেন ২৬১ রানে! ভাঙা আঙুল নিয়ে খেলতে নেমে তাকে সঙ্গ দিয়ে গেলেন শুরুতেই আহত হয়ে মাঠ ছাড়া তামিম ইকবাল।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে লিটন দাসকে (০) কুসল মেন্ডিসের তালুবন্দি করেন মালিঙ্গা। অফ স্টাম্পে পিচ করা বল একটু বেরিয়ে যাচ্ছিল।

লিটন চেষ্টা করেছিলেন সামনের পায়ে ডিফেন্স করার। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে যায় প্রথম স্লিপে মেন্ডিসের হাতে।

পরের বলেই স্টাম্প উড়ে যায় সাকিব আল হাসানের (০)। সুইং করে ভেতরে ঢোকা বলটি যেন চমকে দিয়েছিল সাকিবকে। এক বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে স্বপ্নের মতো ফেরা হলো লাসিথ মালিঙ্গার।

বাংলাদেশের জন্য আরও বড় এক ধাক্কা হলো তামিমের আহত হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরা। ইনজুরি আক্রান্ত তামিম সুরাঙ্গা লাকমলের বাউন্সের পুল করতে চেয়েছিলেন। বল গ্লাভসে লেগে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

মহাবিপদের মধ্যে জুটি গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম এবং মোহাম্মদ মিঠুন। দ্রুত উইকেটে মানিয়ে নেওয়া এই দুজনের জুটি একসময় পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায়। ঘুরতে থাকে রানের চাকা।

৫২ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পূরণের পর ৬৮ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ৬৩ রান করে মিথুন লাসিথ মালিঙ্গার তৃতীয় শিকার হলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ভাঙে ১৩১ রানের দুর্দান্ত এক জুটি।

পরবর্তী ব্যাটসম্যান মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ৪ বলে ১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। ফিরতি ওভারে এসে আবারও ছোবল মারেন মালিঙ্গা। তার শর্ট বল মোসাদ্দেকের (১) ব্যাটের কানায় লেগে কিপারের গ্লাভসে চলে যায়।

এরপর মুশফিকের সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি গড়ে আশা জাগাচ্ছিলেন মিরাজ। কিন্তু স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলতে গিয়ে সুরঙ্গা লাকমলের বলে তারই দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হন ১৫ রান করা এই অল-রাউন্ডার।

দলের এমন বিপর্যয়ে অনেক বার লোয়ার অর্ডার থেকে আশা জাগিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি। তবে আজ পারলেন না। ১১ রান করে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়লেন উপুল থারাঙ্গার হাতে।

মুশফিক যখন সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে, তখন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান রুবেল হোসেন (২)।

ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিকুর রহিম। তিনি যখন ১২৩ বলে ৭ চার ১ ছক্কায় তিন অংকে পৌঁছলেন, তখন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজ ১০ রান করে রান-আউট হওয়ার পর বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভাঙা আঙুলে ব্যান্ডেজ নিয়ে আবারও মাঠে নামেন তামিম।

দেশসেরা ওপেনারকে পেয়ে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন মুশফিক। বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছুটতে থাকে। থিসারা পেরেরার করা শেষ ওভারের তৃতীয় বলে কুসল মেন্ডিসের হাতে ধরা পড়ার আগে মুশফিকের সংগ্রহ ১৫০ বলে ১১ বাউন্ডারি এবং ৪ ওভার বাউন্ডারিতে ১৪৪ রান। এটা তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। তাকে সঙ্গ দিতে আসা তামিম অপরাজিত থাকেন ২ রানে। ২৬১ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here