স্পোর্টস ডেস্ক :: ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখবে বাংলাদেশ। আর টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প নেই ইংলিশদের। এমন সমীকরণে দাঁড়িয়েই বিশ্বকাপের ৩৩তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড।
সোমবার অ্যাডিলেড ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি টাইগারদের।
উইকেটের প্রকৃতি বুঝে ওঠার আগেই দলীয় ৮ রানের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবাল। তবে তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সৌম্য সরকার। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৮৬ রানের জুটি গড়ার পর বিদায় নেন সৌম্য।
আর সৌম্যর পর দ্রুতই বিদায় নেন সাকিব আল হাসান। এরপর পঞ্চম উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১৪১ রানের রড় জুটি গড়ার পাশাপাশি বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করেন মাহমুদউল্লাহ। মুশফিকুর ৮৯ রান করে আউট হন।
মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি: নিজেদের প্রথম চার বিশ্বকাপে কোনো সেঞ্চুরি ছিল না বাংলাদেশের। তবে সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ইনিংসের ২৪তম ওভারে স্টুয়ার্ড ব্রডের বল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে ১ রান নিয়েই সেঞ্চুরি আনন্দে মাতেন মাহমুদউল্লাহ। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটাই প্রথম সেঞ্চুরি। ১৩৮ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ১০৩ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
মাহমুদউল্লাহর ফিফটি: ৮ রানেই তামিম-ইমরুলের বিদায়ের পর সৌম্যকে নিয়ে দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ। ইনিংসের ২৩তম ওভারে ক্রিস জর্ডানের বল কাভারে ঠেলে দিয়ে ১ রান নিয়ে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এটা মাহমুদউল্লাহর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ সেঞ্চুরি।
দ্রুতই সাকিবের বিদায়: মাত্র ৬ বল মোকাবিলা করেই সাজঘরের পথে পা বাড়ান সাকিব। দলীয় ৯৯ রানে ইনিংসের ২১তম ওভারে মঈন আলীর বলে স্লিপে জো রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সাকিবের সংগ্রহ মাত্র ২ রান।
প্রতিরোধের পর সৌম্যর বিদায় : শুরুতেই ২ উইকেট হারানোর পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে ভালই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন সৌম্য। তবে দলীয় ৯৪ রানে ক্রিস জর্ডানের একটি বাউন্সার বলে বিদায় নিতে হয় তাকে। লাফিয়ে ওঠা বলটি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু বলটি তার গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষক জশ বাটলারের গ্লাভসে চলে যায়। ৫২ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৪০ রান করেন সৌম্য।
দ্রুতই ইমরুল-তামিমের বিদায় : বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি ইমরুল। জেমস অ্যান্ডারসনের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে তৃতীয় স্লিপে ক্রিস জর্ডানের তালুবন্দি হন এই ওপেনার (২)। এরপর অ্যান্ডারসনের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে নিজের উইকেট একরকম বিলিয়ে দেন তামিম। স্ট্যাম্পের একটু বাইরের বলে ব্যাট ছোঁয়াতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো জো রুটের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে দুটি পরিবর্তন এসেছে। এনামুল হক বিজয়ের বদলে ইমরুল কায়েস এবং নাসির হোসেনের পরিবর্তে আরাফাত সানী একাদশে ঢুকেছেন।
সাম্প্রতিক পারফরমেন্স আর অতীত ইতিহাস বলছে, এই ম্যাচে ইংল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশই। দুই দলের শেষ তিন দেখায় দুটিতেই টাইগাররা জিতেছেন। সবশেষ দেখায় জয়ের স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। তাও আবার বিশ্বকাপেই। গত বিশ্বকাপের সে সুখস্মৃতি অনুপ্রেরণাই যোগাবে সাকিব, মুশফিকদের।
এদিকে বিশ্বকাপে খুব নাকাল অবস্থা ইংল্যান্ডের। শেষ দুটি ম্যাচই তাদের বাঁচা-মরার লড়াই। আজ বাংলাদেশের কাছে হারলেই বাড়ি ফেরার বিমানের টিকিট কেটে রাখতে হবে ইংলিশদের। আর কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট হাতে পাবে বাংলাদেশ।
টাইগাররা সুযোগ কাজে লাগাতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়!