Shishu-22015মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ নবজাতক শিশু সুরাইয়ার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে হার্টে ছিদ্র থাকার কোন সম্পর্ক নেই। দুর্ভাগ্যবশত সুরাইয়া জম্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত।

চিকিৎসকরা জানান, ভর্তির সময় নবজাতকের বয়স খুবই কম থাকায় (মাত্র তিন দিন) সমস্যাটি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন নি। যখন তার বয়স ১০দিন তখন সুরাইয়ার হার্টে ছিদ্র থাকার ব্যাপারে সকলেই নিশ্চিত হন। যখনই তার হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করতেন তখনই এক ধরনের অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পেতেন বলে জানান চিকিৎসকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢামেকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, দুর্ভাগ্য যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না মাত্র ১৫ দিন বয়সী নবজাতক শিশুটির। মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। জন্মের পর থেকে দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই হাসপাতালেই কাটছে তার। ক্ষুদে এই শরীরটিতে গুলি লেগে ক্ষত হয়েছে। অস্ত্রোপচারে ২১টি সেলাই পড়েছে তার। তার ওপর জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মতো অপ্রত্যাশিত দুঃসংবাদ।

বৃহস্পতিবার শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা শিউলী বলেন, হার্টের ছিদ্র থাকার বিষয়টি নিয়ে তারা গতকাল (বুধবার) পর্যন্ত খুবই চিন্তিত থাকলেও আজ থেকে আর খুব একটা চিন্তিত নন। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ছিদ্রটি এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। আগে হার্ট পরীক্ষার সময় যেমন অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পেতেন তা আজ শোনা যায়নি বলে জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নবজাতক সুরাইয়ার শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে। আজ থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এতদিন তার শরীরে যে স্যালাইন দেয়া হচ্ছিল আজ তা  খুলে ফেলা হয়েছে। আজ থেকে সুরাইয়াকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হবে।

গত কয়েকদিন অস্ত্রোপচারজনিত কারণে আর দশাটা নবজাতকের মতো নড়াচড়া ও কান্নাকাটি না করলেও বর্তমানে সুরাইয়া ক্ষিধে পেলেই কান্নাকাটি করছে। আজ সকাল থেকে মা নাজমা বেগম নিওনেটাল ওয়ার্ডে এসে শিশুটিকে বুকের দুধ খাইয়ে যাচ্ছেন। শনিবার সুরাইয়াকে তার মায়ের কাছে দিয়ে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই মাগুরার নিজ বাড়িতে যুবলীগ সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে মাতৃগর্ভে গুলিবিদ্ধ হয় সুরাইয়া। ওইদিনই আস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাগুরা সদর হাসপাতালে তার জন্ম হয়। এরপর থেকে হাসপাতালেই কাটছে তার দিনরাত ২৪ ঘণ্টা। জন্মের তিনদিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মাগুরা থেকে ঢামেক হাসাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে নিওনেটাল আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here