ভোলা জেলা পরিষদে প্রায় দুই কোটি টাকা কাজের টেন্ডার নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এক গ্রুপ পুলিশের সেল্টারে দরপত্র ক্রয়ে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে অপর গ্রুপ। ৩ জানুয়ারী মঙ্গলবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু’র চাচাতো ভাই ইয়ানুর রহমান বিপস্নব মোলস্না’র বাড়ির বৈঠকখানায় সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়ানুর রহমান বিপস্নব মোল্লার নেতৃত্বে একটি গ্রুপ সকালে টেন্ডারের ফরম কিনতে গেলে পুলিশের উপস্থিতিতে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মেয়র গ্রুপের ক্যাডাররা তাদের ধাওয়া করে। তারা নিরম্নপায় হয়ে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমানের কাছে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করলেও পুলিশের কোন সাড়া পানন নি। গত তিন বছর ধরে ওই ঠিকাদররা তাদের পালিত সন্ত্রাসী দিয়ে এক তরফাভাবে অফিস ম্যানেজের মাধ্যমে অন্য কাউকে অংশ নিতে না দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। জেলা পরিষদের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং ০১ এর ৩৪ গ্রম্নপ উন্নয়ন মূলক কাজের সিডিউল বিক্রির শেষ দিন ৪ জানুয়ারি। কিন্তু গত দুই দিন ধরে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত আবেদন করেও তারা কোন ফরম ক্রয় করতে পারেননি। জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলা পরিষদের টেন্ডার ফরম বিক্রির জন্য পাঠানোর কথা থাকলেও তা পাঠানো হয় নি। অপর দিকে জেলা পরিষদের কার্যালয়ের ইউডি শহিদুল ইসলাম টেন্ডার ফরম বিক্রির দায়িত্বে থাকলেও তার রম্নম দিনভর তালাবদ্ধ ছিল। গত ২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের মোলস্নাপট্টীর একটি গ্রম্নপ ফরম কিনতে গেলে জেলা পরিষদে ক্যাডাররা বাধা দেয়। ওই ক্যাডারদের নেতৃত্বে থাকেন মেয়র মনিরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সালাউদ্দিন লিংকন ও যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক লেলিন। ওই দুই নেতা প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে পিস্তল উচিয়ে মজনু গ্রম্নপকে ধাওয়া করে। এ সময় বিজিপি নেতা আবু জাফরের নেতৃত্বে ভোলা-১ আসনের এমপির লোকজন টেন্ডার ফরম কিনতে আসলে অস্ত্রধারীরা তাদেরকেও ধাওয়া করে। গত সোমবার টেন্ডার ফরম কিনতে না পেরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে ওই দিনই চারজন ঠিকাদার পৃথকভাবে ভোলা থানায় চারটি জিডি করে। কিন্তু তার পরও ৩ জানুয়ারী মঙ্গলবার পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। মঙ্গলবার দিনভর পুলিশের সাথে মেয়র গ্রুপের ক্যাডাররা জেলা পরিষদ চত্ত্বর ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় তারা মঙ্গলবার ফরম কিনতে গেলে ওই ক্যাডাররা পুনরায় তাদের বাধা দেয়। তারা নিরম্নপায় হয়ে ভোলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ আহমেদের কাছে লিখিতভাবে সিডিউল ক্রয়ের জন্য পুলিশী নিরাপত্তা চাইলেও তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে জানায়, দরপত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে পুলিশী সহায়তার কোন বিধান নেই। লিখিত বক্তব্যে ঠিকাদার ও আওয়ামী লীগ নেতা মাইনুর রহমান তুহিন, বিজিপি নেতা আবু জাফর, জাহাঙ্গির আলম ও তরিকুল ইসলাম ভোলায় টেন্ডারবাজির বন্ধের লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তারা আগামীকাল বুধবার দরপত্র বিক্রির শেষ দিনে ফরম না পেলে আইনের আশ্রয় নিবেন বলেও জানান।
দরপত্র বিক্রির শেষ দিন ৪ জানুয়ারি বুধবার ক্ষমতাসিন দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানে যে কোন সময় বড় ধরণের সংঘর্ষ বাধতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
সালাউদ্দিন লিংকন জানান, জেলা পরিষদের তার লাইসেন্স থাকলেও অত অল্প টাকার কাজের টেন্ডার তিনি দেননা। তবে দলীয় ছোটভাইরা তার লাইসেন্স ব্যাবহার করে টেন্ডার ফরম কিনে। তিনি আরও জানান, জেলা পরিষদের টেন্ডার ফরম ক্রয়ে বাধা দেয়ার ঘটনার সাথে তিনি কোনভাবেই জড়িত নন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে জড়ানো হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
ভোলা সদর থানার ওসি মোবাশ্বের আলী ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কমকে জানান, অপ্রীতিকর কোন ঘটনা যাতে না ঘটে এ জন্য জেলা পরিষদে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/এন এম জিকু/ভোলা