তাহমিনা শিল্পীতাহমিনা শিল্পী :: সবে মাত্র স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে পা দিয়েছি। তখন ভালো লাগার বয়স। চারদিকে যা দেখি সবই ভালো লাগে। চলতে চলতে খেয়াল করতাম ডানে বায়ে কৌতুহলী কত চোখ যে আমাকে দেখতো। আমার ডাগর চোখের দিকে তাকিয়ে পথচলতে গিয়ে কতজন যে হোঁচট খেতো। আড় চোখে দেখতাম, আর মুখ টিপে হাসতাম। ব্যাপারটা কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগতো। মনে মনে ভাবতাম অন্য মহল্লার এক সুদর্শন ছেলের সাথে ভালবাসা হলে বেশ হয়! আমাদের মহল্লার এক ছেলে হবে ভিলেন। আর বাবা হবে আমাদের ভালবাসায় বাঁধা।

আহা! প্রেম, রোমাঞ্চ, বিরহ, সাসপেন্স। একেবারে সিনেমার মতো। ভীষন জমে যাবে ব্যাপারটা। কিন্তু একবারও ভাবতে পারিনি ব্যাপারটা এ মহল্লা- সে মহল্লার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা। বরং দেশের সীমানা পেরিয়ে কোনরকম পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই পৌঁছে যাবে সুদুর অষ্ট্রেলিয়াতে।

তখন আমি ঢাকা মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। বাবা রোজ অফিসে যাবার পথে বাইকে করে কলেজের গেটে নামিয়ে দিয়ে গেলেও বাড়ি ফিরতে হতো রিক্সায় করে একাই। আবার কখনো কখনো বন্ধু সাহানার সাথে ফিরতাম।

সকাল নয় টায় ক্লাস শুরু হয়ে চলতো দুপুর দুইটা পর্যন্ত। কিন্তু সপ্তাহে তিনদিন দুপুর বারোটায় ক্লাস শেষ হয়ে আবার তিনটায় ব্যাহারিক ক্লাস হতো বিকাল চারটে পর্যন্ত। ওই সময়টা আমরা বন্ধুরা মিলে কলেজের কাছেই এরাবিয়ান ফাষ্টফুড এন্ড মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বসে খেতাম আর আড্ডা দিতাম। ওখানে আড্ডা দিতে কি যে ভালো লাগতো আমাদের। নীলচে আলোয় কেমন একটা স্বপ্ন স্বপ্ন ভাব ছিলো।

নিয়মিত যাওয়ার কারনে ওই রেস্টুরেন্টের মাঝামাঝি একটা টেবিল আমাদের জন্য বিনা নোটিশেই বরাদ্দ হয়ে গিয়েছিল। রেস্টুরেন্টের স্টাফরাও সবাই আমাদের খুব চেনা হয়ে গিয়েছিল। খাবারের মেনুর সাথে সাথে আমাদের সবার নাম-ধাম বলতে গেলে পুরো বায়োগ্রাফিই প্রায় মুখস্ত করে নিয়েছিল ওখানকার কয়েকজন স্টাফ।

খুবই চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে ছিলাম আমি। বন্ধুদের আড্ডায় বরাবরই ছিলাম মধ্যমনি। গল্পে-গানে একেবারে মাতিয়ে রাখতাম সবাইকে। সেদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা আমাদের নির্ধারিত টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছি। আমি হাত নেড়ে নেড়ে গল্প বলছি। সবাই মনযোগ দিয়ে গল্প শুনছে আর হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।

হঠাৎ করেই রেস্টুরেন্টের ম্যাসিয়ার ইকবাল ছোট্ট একটুকরো কাগজ আমার দিকে এগিয়ে দিলো। খুলে দেখলাম সাদা কাগজে সুন্দর ও স্পষ্ট অক্ষরে, নীল রঙের কালিতে ইংরেজীতে লেখা- Dear Feroza. No more intention. Only wanna be your good friend. please Contact with me.
Andrew Smith,
11/3, Gulshan – 2, Dhaka.
Contract: 8819009

অ্যানড্রিউ স্মিথ! ২৫/২৬ বছর বয়সী ৬ ফুটের সুঠাম দেহী যুবক। সোনালী চুল বাদামী চোখ। আমার ঠিক উল্টো দিকে একটু দুরের একটা টেবিলে বসে আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে। বিস্ময় কাটতে বেশ কিছুটা সময় লেগে গেল। কিছুক্ষণ পর ইকবালকে জিজ্ঞেস করে জানলাম। সে তার মাকে নিয়ে প্রায়ই এখানে আসে। তবে আজ একাই এসেছে। আমার বন্ধু সাহানা বলল, চল কথা বলে জেনে আসি আসল ব্যাপারটা কি? কিন্তু তাকিয়ে দেখলাম সে চলে গেছে। আমি বললাম, বাদ দে তো! হবে কোন নারী পাচারকারী দলের সদস্য।

কথাটা মুখে বললাম ঠিকই কিন্তু পুরোপুরিভাবে মনে নিলাম না। অনেকর দৃষ্টি আমি দেখেছি। ওর দৃষ্টি তাদের সবার থেকে আলাদা। অনেকেরই হাসি আমি দেখেছি। কিন্তু ওর হাসিটা ঠিক অন্যসবার মতো নয়। কি যেন অন্য একটা মানে আছে ওর হাসির। কি যেন এক আকর্ষন আছে ওর দৃষ্টিতে। তার অর্থ খুঁজতেই সেদিন আমি রাত ভোর করে দিলাম।

পরদিন নিয়মমাফিক কলেজে গেলাম। বারোটায় ক্লাস শেষে বন্ধুদের নিয়ে ফের গেলাম এরাবিয়ান ফার্ষ্টফুড রেস্টুরেন্টে। যথনিয়মে চলছে আমাদের আড্ডা এবং খাওয়া। কিছুক্ষণ পর বন্ধু সাহানা প্রায় চিৎকার করে উঠল। ফিরোজা, দেখ সেই লোকটা!

আমরা সবাই চমকে তাকালাম। তাইতো! আবার সে! সেই একই ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর হাসছে। এবার আমার বন্ধুদের মধ্যে গুনগুন শুরু হয়ে গেল। কেউ বলল ফিরোজা ঠিকই বলেছে এই লোক নারী পাচারকারী না হয়ে পারেই না। কেউ বলল আমার কিন্তু তা মনে হয়না। সেদিন একটু বোধহয় ভয় পেলাম আমি। বললাম, চল আমরা বরং চলে যাই। এখানে আর থাকা ঠিক হবে না।

রেষ্টুরেন্টের বিল মিটিয়ে আমরা তাড়াড়াড়ি করে বেরিয়ে এলাম। পরের বেশ কয়েকদিন আর গেলামনা। কিন্তু তার ভাবনাটা আমাকে ছেড়ে গেল না এক মুহর্তের জন্যও। একটু ভয় কেটে যখন কৌতুহলের পাল্লাটা ভারী হলো। তখন দুই সপ্তাহের মত পেরিয়ে গেছে। বন্ধুরা মিলে আলোচনা করে ঠিক করে আমরা আবার গেলাম আমাদের আড্ডাস্থলে। আজ কোথাও সে নেই। কিন্তু আমাদের কৌতুহলী চোখ খুঁজছিল তাকেই। সবাই যখন তার না থাকাতে সাহস ফিরে পেল। তখন আমার ভিতরে একটুখানি আশাভঙ্গের সুর শুনতে পেলাম।তবে কি মনে মনে আমি তার উপস্থিতি প্রত্যাশা করেছিলাম!

কি হয়েছে তার? আজ কেন সে আসেনি? চলে গেছে কি নিজের দেশে? নাকি ক্ষনিকের ইচ্ছের ইতি হয়েছে?এমনি সাত-পাঁচ ভাবনায় ডুবে সেদিনের আড্ডায় ক্ষণে ক্ষণে যেন তাল কেটে যাচ্ছিল আমার। বন্ধুরাও সুযোগ পেয়ে দু’চার কথা শুনাতে ছাড়লনা। তবে আমার যেন কোন কথাই আর আমার কানে পৌঁছাল না সেদিন।

তারপর রেষ্টুরেন্ট থেকে বেরুবার সময় ইকবাল বলল,আপা একবার ক্যাশ কাউন্টারে কথা বলে যাবেন। আপনার জন্য একটা খাম আছে। আমি তো অবাক! খাম! কিসের খাম! ইকবাল বলল, বিদেশী সাহেব রেখে গেছে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য বোধহয় আমি হার্টবিট মিস করেছিলাম। মনে একটা আনন্দের ঢেউ খেলে গেলো।

আমি দ্রুত রেষ্টুরেন্টের ক্যাশ কাউন্টার থেকে খামটা নিলাম। তারপর আর কলেজে না গিয়ে বাড়ী ফিরে গেলাম। নিজের রুমে গিয়ে খামটা খুলে এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম পুরো চিঠিটা। যা পড়লাম তার বাংলা মানে করলে যা দাঁড়াল তা হল-

“অনেক মেয়ে দেখেছি এর আগেও,কিন্তু তোমার মত দেখিনি কাউকেই। এই মেয়ে, তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? দেখা যদি দিবেই তবে এতো দেরী কেন করলে? কেন যোগাযোগ করছনা বলতো? তবে কি আমি তোমার মনে কোন জায়গা তৈরী করতে পারিনি। জানো, সেই প্রথম যেদিন আমি তোমাকে এখানে দেখি কি যে অদ্ভুত এক ভাললাগা আমাকে গ্রাস করে নিল। যার কোন মানে আমার জানা নাই। তোমার চোখ দু’টো যে আমি ভুলতে পারিনি এক মুহূর্তের জন্যও। আমি রোজই এখানে আসি তোমার খোঁজে, কিন্তু তুমি আর আসোনা! আজও এসেছিলাম, কিন্তু তোমার সামনে আসিনি। কিছুই চাওয়ার নেই আমার। শুধু তোমার বন্ধু হয়েই থাকবো। একটি বার কথা বলো। তোমার বন্ধু করে নাও।”

তাহমিনা শিল্পীবুকে আমার একশ সেতারের সুর যেন সেদিন বেজে উঠেছিল একসাথে। ল্যান্ড ফোনের রিসিভারটা হাতে তুলে নিলাম। দু’টো রিং বাজতেই ওপাশে কেউ ফোনটা রিসিভ করল। বলল, হ্যালো, আই এম অ্যানড্রিউ। হু ইজ ইস্পিকিং? আমি চুপ করে রইলাম। কোন কথা বের হচ্ছেনা আমার মুখ থেকে। সে আবার বলল, সরি আই কান্ট হেয়ার এনিথিং। হু আর ইউ অন দ্যা ফোন?

আমাকে চমকে দিয়ে সে পরিষ্কার বাংলায় বলল,তুমি কি ফিরোজা বলছো? আমি বললাম, হ্যাঁ। তারপর কি যে হল কেউ আর কিছুক্ষণ কোন কথা বলতে পারলাম না আমরা। শুধু বুঝতে পারলাম সেই আমার প্রথম ভাললাগা।

তারপর রোজ টেলিফোনে কথা হয় আমাদের। মাঝেমাঝে আগের মতই দূর থেকে দেখা হয় সেই রেষ্টূরেন্টে। চোখে চোখে কথাও হয় সবার অগোচরে। অ্যানড্রিউ ধীরে ধীরে বাংলায় আরো দক্ষ হয়ে উঠল। এভাবেই কেটে গেল কয়েকটি মাস। ফোনে রোজ ওর একটাই দাবী আমাকে একবার কাছ থেকে দেখতে চায়। কিছু একটা বলতে চায়। আমি রোজ বলি, বাবা জানলে খুব সমস্যা হয়ে যাবে। কিন্তু বেশীদিন আর ওর দাবী না মেনে থাকতে পারলাম না।

অবশেষে এলো সেই কাংখিত দিন। আমাদের সেই এরাবিয়ান রেষ্টুরেন্ট। নীলচে স্বপ্নীল মায়াবী আলোয় আমি আর অ্যানড্রিউ। দুজনে মুখোমুখি। অসম্ভব ভালোলাগার আবেশ। অ্যানড্রিউ আমার পাশের চেয়ারে এসে বসল। আমাকে কয়েকটি লাল গোলাপ আর এক জোড়া পায়েল দিল। বেশ কিছুক্ষন শুধু আমরা একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়েই থাকলাম অপলক। অ্যানড্রিউ প্রথম কথা বলল, কি ভয় করছে খুব? আমি বললাম, না, এখন আর ভয় করছে না! ও আমার হাতটা ধরে বলল, এই মেয়ে বোঝনা ভালবাসি! একবার যদি বলো আমি সারাজীবনের জন্য এখানেই থেকে যাব। থাকবেতো আমার সাথে সারাটা জীবন? না যদি থাকো বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিবো কোন একটা চার্চে!

আমার কথা বলার সমস্ত শক্তি যেন ফুরিয়ে গেল। আমার সারা গায়ে কাঁটা দিল। হৃদয়ে অনেক্ষন ধরে চলল মৃদু কম্পন। সে কম্পন ছড়িয়ে গেল সারা দেহে। আমি কোন কথা না বলে মাথাটা এলিয়ে দিলাম ওর কাঁধে। ও আরো একটু শক্ত করে ধরে থাকল আমার হাতটা। এভাবে কতক্ষণ আমার ঠিক মনে নেই।

অসম্ভব ফিরে এলাম বাড়ীতে। অসময়ে বাবা বাড়ীতে আজ। আবহাওয়া কেমন উত্তপ্ত মনে হল। যা শুনলাম তাতে আমার মহল্লার এক বড় ভাই যে কিনা হাজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল আমার ভালবাসা পেতে। সে বাবাকে আমার আর অ্যানড্রিউ-র ব্যাপারে সব তথ্য পাচার করেছে। ব্যস আমার কলেজে যাওয়া বন্ধ হল। ফোন ধরাতো দূরে, ফোনের দিকে তাকানোও নিষেধ হয়ে গেল। ওই সময়ে অ্যানড্রিউ অনেকবার বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পারেনি। সমাজের নানান কটূকথা। বাবার স্ট্রোক, মায়ের কান্নাকাটি। সব মিলিয়ে আমি ভীষনভানে ভেঙে পড়েছিলাম।

তারপর একদিন সাহানার হাতে একটা চিঠি পাঠালাম অ্যানড্রিউ-র কাছে। তাতে শুধু লিখেছিলাম, এজীবনে হবেনা আর তোমার-আমার একসাথে পথচলা। ভালো থেকো তুমি। এদেশ ছেড়ে যাবার আগে একবার শুধু দেখা করতে চেয়েছিল। নিজের ইচ্ছের জলাঞ্জলী দিয়ে শেষ দেখাটাও আমি করলাম না আর ওর সাথে।

অ্যানড্রিউ চলে গেল নিজের দেশে। যাবার আগে চিঠিতে ওর অষ্ট্রেলিয়ার বাড়ীর ঠিকানা, ফোন নম্বর আর ম্যাসেজ রেখে গেলো। তাতে লেখা ছিল-“চাইনা তুমি খারাপ থাক। পড়াশুনা নষ্ট হোক তোমার। চলে যাচ্ছি দেশে। তবুও যেন, সবসময় আছি তোমার সাথে। যদি কোনদিন মনে হয় আমাদের একসাথে পা মিলিয়ে হাঁটা সম্ভব। একবার শুধু জানিও। পাবে আমাকে।”

আবার সব স্বাভাবিক। আমি কলেজে যাই, ক্লাস করি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই। কিন্তু কোথাও আর প্রাণ খুঁজে পাইনা। অ্যানড্রিউ চলে গেল ঠিকই। কিন্তু আমার অস্তিত্ব জুড়ে থেকো গেল। সবসময় মনে হত-কোন এক পূর্ণিমার রাতে একবার ফোন করে সে বলবে-“একবার ছাদে গিয়ে দাঁড়াও। দ্যাখো কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে আকাশে।” ঠিক যেমন করে বলত এদেশে থাকতে। আমি ফোন রেখে ছাদে যাব,চাঁদের মাঝে ওকে দেখতে পাব।

অ্যানড্রিউ সেই আমার প্রথম ভালবাসা। সাহানার কাছেই শুনেছিলাম ওর কাছে বেশ কয়েবার ফোন করে খোঁজ জেনেছে আমার। ভীষন অভিমানী ও। জানি আমার উপর কোন রাগ নেই ওর। আছে একরাশ অভিমান। সাহানার বর অষ্ট্রেলিয়াতেই থাকত। তার কাছেই খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম দেশে ফিরেই নাকি অ্যানড্রিউ একটা চার্চে চলে গিয়েছিল।

আচ্ছা, আমার দেশের কোন ছেলেও কি এভাবেই ভালবাসত আমায়? হয়ত নয়। ওই অল্প কদিনে অ্যানড্রিউকে আমি যতোটা চিনেছিলাম। ততোটা চিনিনি আমি আমার দেশের কোন ছেলেকে। বিয়ে করো, বিয়ে করো শুনেও না শোনার ভান করেই কাটিয়ে দিলাম জীবিনের পঞ্চাশটি বছর। কেউ কেউ আফসোস করে বলত-আহা! এত ভাল একটা মেয়ের কিনা বর জুটলনা! কিন্তু একবারও কেউ বলেনি ভালবাসো!

তবুও আমি আমার চারপাশের পৃথীবীতে থেকেও নিলাম স্বেচ্ছা নির্বাসন। আমি শারীরিকভাবে এখানে। আর মানসিকভাবে অন্যখানে তার সাথে। কেউ তার খবর রাখেনা! নিশ্চতভাবে জানি কোথাও একজন আমার জন্য আছে। আমার কথা ভাবছে। এ এমন এক পাওয়া। যা আমার বাস্তবিক পাওয়ার থেকেও অনেক বেশী মনে হয়।

বহুকাল ধরে পূর্ণিমার রাতে আমি বারান্দায় কডলেস ফোন হাতে অপেক্ষা করে থাকি। আজও আছি। আর মনে মনে বলছি-“জানতো অ্যানড্রিউ! ভালবাসার একশ রকম আকার-প্রকার থাকতে পারে। তোমার মতো করে আমিও তোমায় চেয়েছিলাম। কিন্তু বলতে পারিনি। তোমাকেও না, আমাকেও না। সেদিনও না, আজকেও না।”

তারপর? তারপর কি হল?

হঠাৎ করেই বীনা নোটিসে বেজে উঠল ফিরোজা বেগমের কোলের উপর পরে থাকা ফোনটি। খুব আস্তে ফোনটা হাতে তুলে নিলেন তিনি। ডান কানে ফোনটা ঠেকিয়ে মাথাটা এলিয়ে দিলেন রকিং চেয়ারটাতে। কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে চোখ বন্ধ করে ফেললেন। তারপর আস্তে করে বললেন-“হ্যালো!”

১৩.০২.২০১৬

লেখকের ইমেইল: tahmina_shilpi@yahoo.com

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here