কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া থেকে
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের পেশায় ভ্যানচালক হতদরিদ্র মারজুল ইসলাম ২ কন্যা ও ১ পুত্র সন-ানের জনক। এরমধ্যে ছোটকন্যা শিরিন সুলতানা (১৫) লেখাপড়ায় যেমনি মেধাবী তেমনি সঙ্গীতাঙ্গনেও তার প্রতিভার দ্যুতি ছড়িয়ে নিজেকে মেলে ধরে নাম লেখাতে সক্ষম হয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীদের তালিকায়।
শিরিন সুলতানা হতদরিদ্র ঘরের সন-ান হওয়া সত্বেও ২০১১ সালে বিজ্ঞান বিভাগে মিরপুর সরকারী মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪.৪৪ জিপিএ পেয়ে পাশ করার কৃতিত্ব দেখায়। কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তির সুযোগ পেয়েও বাবার সামর্থহীনতার কারনে সেখানে শেষমেষ ভর্তি হওয়া হয়নি। বর্তমানে মিরপুরের ছাতিয়ান মহাবিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণীতে লেখাপড়া করছেন।
লালনগীতি, ভাটিয়ালি, আধুনিক, দেহতত্ব, মাইজভান্ডারী, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সংগীত সবধরনের গান গাইতে পারঙ্গম শিরিনা সুলতানার কাছে দর্শক শ্রোতারা লালনগীতি গান শুনতে বেশি আগ্রহ দেখান। যার কারনে শিরিন সুলতানাকে বলা হয় লালন শিল্পী। একদিন বড় হয়ে কণ্ঠশিল্পী হবেন এমন আশা ছিলনা তার। বছর পাঁচেক আগে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় তৎকালীন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজম খাঁন (বর্তমানে যুগ্ম সচিব) তাঁর মেয়ে জেরিন খানের বান্ধবী হবার সুবাদে শিরিন সুলতানাকে গান শেখার অনুরোধ করেন এবং শিরিন গান শেখার অনুরোধ সাদরে গ্রহন করলে আজম খান শিরিনাকে একটি হারমোনিয়াম কিনে দেন।
সেই থেকে শিরিন সুলতানার গানের জগতে প্রবেশ। সুশান- কুমার বিশ্বাস মনি ও টিপু সুলতানের কাছে গান শিখেছেন। বর্তমানে রফিকুল ইসলামের কাছে শিরিন সুলতানা গানের নিয়মিত তালিম নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই সঙ্গীত প্রতিভা শিরিন সুলতানা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা, জাতীয় শিশু কিশোর প্রতিযোগীতা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার, চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ, মিরপুর সেরা কণ্ঠ ও ক্ষুদে গানরাজ প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে তার সঙ্গিত প্রতিভার পরিচয় দেবার পাশাপাশি অসংখ্য পদক জয় করেছেন।
এছাড়াও মাসের প্রায়দিনই দেশের বিভিন্নস’ানে ষ্ট্রেজ শো করছেন মফস্বলের এই গুনি সংগীত প্রতিভা শিরিন সুলতানা।