ভারতের বিহার প্রদেশের সারে থানা এলাকায় মা, বাবা ও ভাইয়ের সামনে ভাবিকে ধর্ষণ করেছে দেবর। আর ধর্ষণের সময় বাব, মা ও ভাই নীবর দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন।

বিয়ের সময় পণ নেওয়ার রীতি যে এই একবিংশ শতকেও চালু রয়েছে এবং পণের অনাদায়ে যথেচ্ছ বধূ নির্যাতনও যে এদেশে হয়ে থাকে, তার অনেক প্রমাণ সংবাদপত্রের পাতায় চোখ রাখলেই মেলে। এবার সেই পণঘটিত বধূ নির্যাতনেরই এক চূড়ান্ত লজ্জাজনক ঘটনা ঘটল বিহারে, যেখানে এক বধূ ধর্ষিতা হলেন তার চাচাতো দেবরের হাতে এবং তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি সেই সময়ে বসে রইলেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়।

জানা গেছে, নির্যাতিতা মহিলা প্রাথমিকভাবে স্থানীয় পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুবিচারের আশায়। কিন্তু তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পঞ্চায়েত সদস্যদের উপর প্রভাব ঘাটিয়ে আপোস রফার দিকে বিষয়টিকে ঠেলে দেয়।

গত ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ সালে মহিলা থানায় নিজের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নির্যাতিতা। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, তার বিয়ে হয় ২ জুলাই ২০১৪ সালে। তারপর মাত্র ৬ দিন তিনি শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন।

এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বাপের বাড়ি রেখে আসে। বলা হয়, ৫ লাখ টাকা দিলে তবেই তাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। বধূর বাবা অনেক কষ্ট করে দুই লাখ টাকা জোগাড় করতে সক্ষম হলে, তাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

৬ মাস আগে বাকি তিন লাখ টাকার দাবি তুলে বধূর উপর অত্যাচার শুরু হয়। ইতিমধ্যে বধূ জানতে পারেন যে, তার স্বামীর সঙ্গে স্বামীর ভাবির একটি সম্পর্ক রয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে যুবতীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সপ্তাহখানেক আগে যুবতীর চাচাতো দেবর আসে এবং তার সঙ্গে বধূর স্বামীর গোপন শলাপরামর্শ হয়।

এর পরে স্বামী ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যান, আর ওই দেবর যুবতীকে ধর্ষণ করে। বধূ সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও তার স্বামী বা শ্বশুর-শাশুড়ি কেউ এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ।

নির্যাতিতা দেবর রজনীশ কুমারের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন এবং স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে অপরাধে মদতের অভিযোগ দায়ের করেছেন। পণ সংক্রান্ত অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে রজনীশসহ চারজনের বিরুদ্ধে।

মহিলা থানার কর্মকর্তা মৃদুলা কুমার জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে, অপরাধীরা শাস্তি পাবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here