Wheat201ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গমের যতোটুকু এখনও বিতরণ করা হয়নি, তা আর বিতরণ করা যাবে না বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সঙ্গে আরো ২ সপ্তাহ স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ রোববার সকালে এই আদেশ দেন। রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট পাবেল মিয়া আাদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৫ জুলাই ‘ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম কাউকে জোর করে দেওয়া যাবে না এবং কেউ ওই গম ফেরত দিতে চাইলে কর্তৃপক্ষকে তা ফেরত নিতে হবে’ এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে এ বিষয়ে দায়ের করা রিট নিষ্পত্তি করে দেন হাইকোর্ট।

তার আগে ৯ জুলাই আদালতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ এই আবেদন করেন। পরে চেম্বার জজ আদালত আবেদনের ওপর শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে আদেশ দেন।

আমদানী করা গম খাওয়ার উপযোগী বলে খাদ্য অধিদফতরের ডিজির প্রতিবেদন দেয়ার পরে আদালত এই আদেশ দিয়েছিল। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২২টি (টেস্ট) পরীক্ষায় পোকামাকড় রয়েছে বলা হয়। অপর ২৩টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষায় বলা হয় টেন্ডারের নমুনা অনুযায়ী গম ব্রাজিল থেকেই আমদানী করা হয়নি।আমদানি করা দুই লাখ পাঁচ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন গমের মধ্যে এক লাখ ৭৪ হাজার ৯২৬ মেট্রিক টনইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।

ইতিমধ্যে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, জেলখানা, বিভিন্ন ডিলার ও আটা কল ছাড়াও টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিখাসহ (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিতরণ করা ওই গম কেউ ফেরত দিতে চাইলে তাফেরত নিতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আদেশের পর ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, খাদ্য অধিদফতরের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত বলেছেন, গম, খাওয়ার উপযোগী নয়, এই কথা কোথাও বলা হয়নি। অর্থাৎ ওই গম খাওয়ার উপযোগী।

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ওই গম ‘নষ্ট ও পচা’ বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আপত্তি তোলার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে আলোচনা শুরু হয়।

এর আগে গত ২৮জুন গম আমদানির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গম নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট পাবেল মিয়া। রিটে দুদকের মাধ্যমে তদন্ত এবং বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বারি) এর মাধ্যমে গম পরীক্ষার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

এছাড়া মানহীন গম আমদানি এবং সরবরাহ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, বিএসটিআই ও বারির ল্যাবেরটরীতে পরীক্ষার কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, অনিয়মের অভিযোগ কেন তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হবে না, মর্মে রুল চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি করে ৩০ জুন হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। ওই গম মানুষের খাওয়ার উপযোগী কি-না, সে বিষয়ে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

আদেশ অনুযায়ী, খাদ্য অধিদফতরের মহা-পরিচালকের পাঠানো প্রতিবদন গত ৫ জুলাই আদালতে দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

বাংলাদেশ শিল্প বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে মহাপরিচালকের প্রতিবেদনে বলা হয়, আমদানি করা গমের মাননিয়ে প্রশ্ন উঠায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিভিন্ন জেলার খাদ্য গুদাম মজুদ ওই গমের ৫৭টি নমুনা নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here