বুধবার প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সকাল ৯ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলায় স্থাপিত কেন্দ্রে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কোনো ব্যালটে যদি কেউ পরিচিতিমূলক সংকেত ব্যবহার করেন বা প্রকাশ্যে ভোট দেন তবে সেই ব্যালট বাতিল হবে। একইসঙ্গে যে বা যারা এ কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, কোনো ভোটার বা জনপ্রতিনিধি ভোটকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ভোটারকে তল্লাশি করে তা নিশ্চিত করবেন। ব্যালট পেপারের কোথাও পরিচিতিমূলক সংকেত চিহ্ন ব্যবহার করলে তা বাতিল করা হবে। এবং প্রকাশ্যে ভোটও দিলে তা বাতিল ও দণ্ডনিয় অপরাধ বলে গন্য হবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, কেউ বলছেন-ক্যামেরায় ছবি তুলে আনতে, কেউ বলছেন ব্যালট পেপারের পেছনে বিশেষ চিহ্ন দিতে। এ ধরনের কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

ইসি জানিয়েছে, ৬১ জেলায় ভোট হচ্ছে এবার। প্রতি জেলায় চেয়ারম্যান একজন, সাধারণ সদস্য ১৫টি ওয়ার্ডে ১৫ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটারের এ নির্বাচনে জেলা ও উপজেলায় ওয়ার্ডভিত্তিক ৯১৫টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২১ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন; কুষ্টিয়া জেলায় চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর আদালতের আদেশে তা স্থগিত করা হয়।

নির্বাচনকে ঘিরে অনেক এলাকায় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীরা ভোট কেনা বেচা ও নানা পদ্ধতি ব্যবহারে চাপ দিচ্ছেন বলেও গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, কিছু প্রার্থী ও সরকার দলীয় এমপি নানাভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন এমন অভিযোগ লিখিত ও মৌখিকভাবে আমরা পেয়েছি। তারা (এমপি) প্রভাব বিস্তার করছেন। তবে কিছু এমপি আমাদের সহায়তা করছেন। কিছু এমপি প্রভাব বিস্তার করছেন স্থানীয়ভাবে। আমরা তাদের বলতে চাই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করবেন না। যারা প্রভাব বিস্তার করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। যারা এগুলো করছেন তা থেকে বিরত থাকুন। তাদের বলছি দুই দিনের জন্য এলাকা থেকে চলে যান। সংসদ সদস্য অথবা প্রভাবশালী যেই হন না কেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবেন না। নইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু আপনারা ভোটার না তাই আপনাদের এলাকায় থাকার অধিকার নেই।

প্রার্থী-ভোটার সংখ্যা

কার্যত ৩৯ জেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে। নির্বাচনে প্রতি জেলায় মোট কেন্দ্র ১৫টি। নির্বাচনে মেয়র পদে ১৪৬ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২ হাজার ৯৮৬ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৮০৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। ২১ জন চেয়ারম্যানের পাশাপাশি ৫৩ জন সংরক্ষিত সদস্য ও ১৩৯ জন সাধারণ সদস্যও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সারাদেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ৬৩ হাজার ১৪৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ ৪৮ হাজার ৩৪৩ ও নারী ১৪ হাজার ৮০০ জন।

নির্দলীয় এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন অনেক জেলায়। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এ নির্বাচনের সমালোচনা করে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here