দেশের দুঃখি মানুষের মুখে হাঁসি ফোটানোর জন্য আমার বাবা-মা-ভাই জীবন দিয়েছে। আমি সেই জাতীর জন্য প্রয়োজনে আমার বুকের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করব। বুধবার কোটালীপাড়ার জনসমুদ্রে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাঁসি দিয়ে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও বাংলার মাটিতে হবেই হবে। বিরোধী দলীয় নেতৃকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন আন্দোলন-সংগ্রাম করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো যাবেনা। আপনার সরকার আমলে জনগণের টাকা লুট-পাট করে বিদেশে পাচার করেছেন। জনগণ তার হিসাব চায়।

৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা ৪ হাজার ৩শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা ৩ হাজার ২শ মেগাওয়াটে নামিয়ে এনেছেন। এবারে আমরা ক্ষমতা গ্রহণের পর সে বিদ্যুৎ ঘাটতি পুষিয়ে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে বাতী জ্বালানোর ব্যবস’া করেছি। যেখানে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছেনি সেখানে সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে বাতী জ্বালানোর ব্যবস’া গ্রহণ করেছে এ সরকার। গোপালগঞ্জের উন্নয়নের ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে গোপালগঞ্জে এ পর্যন- কোন শিল্প কল-কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ছোয়া লাগেনি তেমন কোন উন্নয়নেরও। শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলেই কিছু উন্নয়ন কাজ হয়। সে জন্য আমরা সার্বতভাবে মনযোগ দিয়েছি। যাতে এলাকার মানুষ আর কষ্ট না পায়।

বিকাল ৩ টায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ জয়ধরের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের উপ-নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধূরী, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী সাহাজাহান খান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স’ানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, স্বেচ্ছা সেবক লীগ সভাপতি পংকজ দেবনাথ, আওমীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লা, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষায়ক সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রতিনিধি এ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, কোটালীপাড়া পৌর মেয়র অহিদুল ইসলাম হাজরা, গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি খায়রুল আলম খানসহ স’ানীয় আ’লীগ নেতৃবৃন্দ।

এর আগে তিনি দুপুর ১২ টা ২০ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে কোটালীপাড়া পৌঁছান। ১২ টা ২৬ মিনিটে উপজেলা পরিষদ ভবনের ভিত্তিপ্রস-র স’াপন ও ফলোক উন্মোচন করেন। ১২ টা ৩৮ মিনিটে কোটালীপাড়ায় নব নির্মিত পৌর ভবনের উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে তিনি দুপুর ১ টায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচনে পৌঁছে অসুস’্য সাংবাদিক ও কলমিষ্ট, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির প্রধান কমরেড নির্মল সেনের পাশে বসে তাঁর শারীরিক অবস’ার খোজ খবর নেন। এবং চিকিৎসার জন্য তাকে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও প্রতি মাসে ১০ হাজার করে টাকা দেয়ার অঙ্গিকার করেন। সেখানে তিনি নির্মল সেনকে বলেন, আপনি আমার কলেজ প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন। আমি আপনার স্বপ্নের মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করে দেব। এর পর তিনি ওই স’ানে বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর ফলোক উন্মোচন করেন। বিকেল ৪ টা ৩৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়া ত্যাগ করেন।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here