কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে সরিষার আবাদ ব্যাপক হারে বেড়ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মধু চাষ। সরিষা ও মধু চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন কয়েক শতাধিক কৃষক।তাদের অনেকেই আজ স্বাবলম্বী। উপজেলার কাওনা ব্রীজ থেকে জিনারী পর্যন- ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী রাস-ার দুপাশে তাকালেই চোখে পড়বে দৃষ্টিনন্দন সরিষা ক্ষেতে হলুদের সমারোহ। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠছে চার দিক।দিগন-জোড়া হলুদের চাদর আর মৌমাছির দল বেধেঁ বিচরন যেকোন পথিককেই যেমন আকৃষ্ট করে, তেমনি অভিভুত করে সরিষার ক্ষেতে মৌমাছির মধু সংগ্রহের প্রতিযোগিতার নয়নাভিরাম দৃশ্য।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়,প্রতিটি কৃষক সরিষাক্ষেত পরিচর্যায় ব্যাস- সময় কাটাচ্ছেন।সাহেবের চরের কৃষক বাদল মিয়া জানান,এ বছর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় চাষীরা যথাসময়ে সরিষার চাষ করে।তাছাড়া অনুকল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম হওয়ায়  বাম্পার ফলন হয়েছে।গোবিন্দপুরের কৃষক সোহরাব উদ্দিন জানান,গত বছর এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে সমস- খরচ বাদ দিয়ে ১৫ হাজার টাকা আয় করেছেন।তাই এ বছর অন্যান্য ফসল কমিয়ে দিয়ে ২ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন।

ফলন ভাল হওয়ায় তিনি গতবারের তুলনায় এবার দ্বিগুনেরও বেশী লাভের আশা করছেন। বিশ্বনাথপুরের কৃষক সোহরাব উদ্দিন ও ফরিদ মিয়া জানান,ব্রহ্মপুত্রের বিস-ীর্ণ চরাঞ্চলে গত কয়েক বছর আগেও রবি মৌসুমে অধিকাংশ কৃষকের জমি অনাবাদি থাকত।কিছু জমিতে বাদাম,মিষ্টি আলু,আখ ও আমন ধান চাষ করা হত।কিন’ এসব ফসলে কৃষকরা তেমন লাভবান হতো না কিন’ বাজারে সরিষার দাম ভাল থাকায় এবং কম খরচে বেশী লাভ হয় বিধায় এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।স’ানীয় কৃষি অফিসের সূত্র মতে,স্বল্প সময়ে বিনা-০৩,বারি-১৫ ও টরি-০৭ জাতের সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে।এগুলো হেক্টর প্রতি ১-১.২৫ মেট্রিকটন পর্যন- ফলন হয়ে থাকে।

উপজেলার পানান গ্রামের মধু চাষী জয়নাল মিয়া জানান,একটি বেসরকারী সংস’া থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে সরিষা ক্ষেতে মধু চাষ করে গত বছর সব খরচ বাদ দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেছেন।চরাঞ্চলে সরিষা চাষ বেশী হওয়ায় মধু চাষের পরিধিও বাড়িয়ে দিয়েছেন।তাই এবার লক্ষাধিক টাকা আয় হওয়ার প্রত্যাশা করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আহম্মদ জানান,চলতি মৌসুমে হোসেনপুরের বিস-ীর্ণ চরাঞ্চলসহ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন থাকলেও আবাদ হয়েছে ৩২ হেক্টরের বেশী।ফলনের সম্ভাবনা ৩৫-৪০ মেঃটন।অনুকুল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের যথাযথ নজরদারী থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

জাহাঙ্গীর আলম, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here